পুলিশ সুপার ও সদর থানার ওসির উদ্যোগে ঝিনাইদহের পলাতক ৩৫ পরিবার বাড়ি ফিরেছে

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ও সদর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছেন। তাদের উদ্যোগে ২টি ইউনিয়নের পলাতক ৩৫ পরিবার অবশেষে নিজ নিজ বসত বাড়িতে ফিরে এসেছেন। সামাজিক কোন্দলের জের ধরে দীর্ঘ প্রায় দু বছর ধরে পলাতক পরিবারগুলোকে নিজ নিজ বাড়িতে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবারে প্রশাসনের উদ্যোগে পাঠানো হয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথ জানান, ঝিনাইদহের পোড়াহাটি ইউনিয়নে ইস্তেকাপুর ও মধুপুর গ্রামে সামাজিক কোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের আক্রোশ ও হামলার আশঙ্কার ভয়ে ১৫টি পরিবার ঘরছাড়া হয়। তারা দীর্ঘ প্রায় দু বছর ধরে পলাতক এ পরিবার-পরিজন নিয়ে শহরে ঘর ভাড়া করে কষ্টে দিনাতিপাত করছিলো।

অপরদিকে ফুরসন্ধি ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের ২০টি পরিবার একইভাবে সামাজিক কোন্দলের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলার আশঙ্কায় শহরে ঘর ভাড়া করে বসবাস করে আসছিলো। গত বুধবার ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন ও সদর থানার ওসি বিপ্লব কুমার নাথের কাছে পলাতক পরিবারগুলো বাড়ি ফেরার জন্য আবেদন করেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপারের নির্দেশে সদর থানার পুলিশ এলাকায় গিয়ে এ খবরের সত্যতা পান। এ কারণে স্থানীয় সামাজিক নেতাদের সাথে পুলিশ বৈঠক করে শুক্রবার বিকেলে ইস্তেকাপুর গ্রামের পলাতক হাসানুজ্জামান তিতু, আব্দুল মজিদ, আবুল বাশার, আব্দুল করিম, লুৎফর রহমান, আবুল কালাম, কিয়াম হোসেন, ইউনুস আলী, মিঠু হোসেন, মধুপুর গ্রামের মিলন হোসেন, মনিরুল ইসলাম, আজিজুলসহ ১৫টি পরিবারকে নিজ বাড়িতে তুলে দিয়ে আসেন। একইভাবে শনিবার দুপুরে দীঘিরপাড় গ্রামের পলাতক মান্নান বিশ্বাস, রেজোয়ান, বাবুল হোসেন, সেলিম আলী, ইউনুস আলী, গোলাম আলী, আব্দুল ওহাব, নিয়ামুলসহ ২৫ পরিবারকে পুলিশের উদ্যোগে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে তুলে দেন।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন জানান, যাদের জন্মভূমি বসত ভিটা ছেড়ে পলাতক জীবনযাপন করবে এটাতো তারা মেনে নিতে পারেন না। এ খবর পাওয়ার পর থেকে দ্রুত তাদের বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তবে এরপর থেকে এ ধরনের কোনো খবর শোনা মাত্রই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

বাড়িতে ফিরে আসা হাসানুজ্জামান তিতু জানান, দীর্ঘ প্রায় দু বছর আগে পোড়াহাটি ইউনিয়নের মধুপুর দাখিল মাদরাসার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরনের লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। সামাজিক প্রতিপক্ষের ভয়ে তাদের ১৫টি পরিবার গ্রাম ছেড়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছিলো। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে এখন তারা সবাই নিজ নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম হিরণ তার সামাজিক ও দলীয় লোকজনের ভয়ে তারা যে গ্রাম ছাড়া হয়েছিলো এটা ঠিক নয় বলে মন্তব্য করেন।

অপরদিকে ফুরসন্ধি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিকদার জানান, এ ইউনিয়নের দীঘিরপাড় গ্রামের ২০টি পরিবার দীর্ঘ দেড় বছর ধরে পলাতক ছিলো। তারা তার সামাজিক দল করার কারণে প্রতিপক্ষ আব্দুল মালেকের লোকজনের ভয়ে তারা ঘর ছাড়া হন। তারা এখন পুলিশের সহযোগিতায় সবাই বাড়িতে ফিরে এসেছে বলে জানান।
তবে এ বিষয়ে আব্দুল মালেক জানান, তার সামাজিক দল থাকলেও তার দলীয় লোকজন এসব অপরাধমূলক কাজ করে না। এখন পলাতক পরিবারগুলো নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ায় তাদের মধ্যে শান্তি বিরাজ করছে।