ইবির ছাত্রীহলে পুরুষ কর্মচারী দিয়ে তল্লাশি করায় ছাত্রীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী হলে পুরুষ কর্মচারীদের দিয়ে তল্লাশির নামে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য চালু হওয়া শেখ হাসিনা হলে এ ঘটনা ঘটেছে। এদিকে হলে মহিলা আবাসিক শিক্ষক ও নারী কর্মচারী থাকা সত্ত্বেও পুরুষদের দিয়ে তল্লাশি করার ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন ছাত্রীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করলেও প্রভোস্টের ভয়ে প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাতে সাহস পাচ্ছেন না তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও হলের একাধিক আবাসিক ছাত্রী জানান, শনিবার বেলা তিনটার দিকে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লুর নেতৃত্বে আকস্মিকভাবে হলের তৃতীয় তলায় তল্লাশি শুরু হয়। এ সময় হলের আবাসিক শিক্ষক আমজাদ হোসেন ও ফৌজিয়া খাতুনসহ দুইজন কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। ইলেকট্রিক হিটার উচ্ছেদ করার নামে তল্লাশি শুরু হলেও ছাত্রীদের ব্যক্তিগত ব্যাগে তল্লাশি চালানোর অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশ ছাত্রী অভিযোগ করেন, প্রভোস্ট ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লুর উপস্থিতিতে দু পুরুষ কর্মচারী ছাত্রীদের রুমে রুমে গিয়ে তল্লাশি করেন। এ সময় ছাত্রীদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলেন তারা। তখন হলের আবাসিক শিক্ষক আলতাফ হোসেন ও ফৌজিয়া খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

ছাত্রীরা জানান, পুরুষ কর্মচারী দিয়ে তল্লাশি করায় ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে প্রভোস্ট তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় ছাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। অধিকাংশ ছাত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ছাত্রীদের রুমে হিটার পাওয়া গেলে প্রভোস্ট স্যার তার সিট বাতিলের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমরা সে ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। কিন্তু প্রভোস্ট স্যার কিভাবে পুরুষ কর্মচারীদেরকে ছাত্রীদের রুমে তল্লাশি করালেন? এর আগেও বিভিন্ন হলে হিটার উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। সেখানে মহিলা কর্মচারী ও আবাসিক শিক্ষকরা এগুলো করতেন। প্রভোস্ট সম্পূর্ণ নিজের ক্ষমতার জোরে এভাবে আমাদের অপদস্থ করেছেন। হিটার কখনো ছাত্রীদের ব্যাগে বা আলমিরাতে থাকে না। হল প্রশাসন কেন আমাদের ব্যাগ ও আলমিরা লণ্ডভণ্ড করলেন তা আমরা জানতে চাই। ছাত্রীরা আরো জানান, হলের সিট বাতিল হওয়ার ভয়ে এ ঘটনার পর থেকে ছাত্রীরা তাদের ব্যাগপত্র অন্যান্য হলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। শনিবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রীরা তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে অন্য হলে রেখে আসতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু বলেন, সম্পূর্ণ নিয়ম মেনে হলের সকল আবাসিক শিক্ষকের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। কোন ছাত্রীর ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণ হবার মতো কোনো কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সব কিছু করেছি। ছাত্রীদের উত্থাপিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলের ডাইনিঙে কতোজন ছাত্রী নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করে সে ব্যাপারে একটি রিপোর্ট চেয়ে সপ্তাহখানেক আগে হলের ডাইনিঙে আমি নোটিস দিয়েছিলাম। ডাইনিঙ ম্যানেজারের রিপোর্টের পর জানতে পারলাম অধিকাংশ ছাত্রী অবৈধ হিটার ব্যবহার করে। ফলে শনিবার এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

Leave a comment