মহাসড়কে অটোরিকশা-টেম্পো চলাচল আজ থেকে নিষিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: মহাসড়কে অটোরিকশা (থ্রি হুইলার), টেম্পো ও সব ধরনের অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ২৭ জুলাই নিষেধাজ্ঞার এ প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত আজ শনিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে।

মহাসড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে এ সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানিয়েছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। মহাসড়কে কম গতির ছোট গাড়িগুলোকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করে দীর্ঘদিন ধরেই এগুলোর চলাচল বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছিলেন বাস মালিক-চালকরা। এদিকে মহাসড়কে অটোরিকশা-টেম্পো চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আলাদা লেনের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অটোরিকশা-অটোটেম্পো সংগ্রাম পরিষদ।

এর আগে একের পর এক দুর্ঘটনার কারণে গত বছর হাইকোর্ট দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ১০ জেলার মহাসড়কে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত তিন চাকার বাহন নসিমন, করিমন ও ভটভটি না চালানোর নির্দেশ দেয়। পরে সরকারও মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাসহ শ্যালোইঞ্জিনচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধে কঠোর হয়। কিন্তু গত কয়েক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে অটোরিকশা দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে গেলে বিষয়টি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মল্লিক ফকরুল ইসলাম জানান, নিষেধাজ্ঞার নির্দেশনা আমরা হাতে পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সবাইকে অবহিত করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকেই আমরা অযান্ত্রিক যানবাহনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো মহাসড়কে অটোরিকশা ও নসিমন-করিমন বন্ধ করার জন্য। এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, শুধু নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করলেই হবে না। এগুলো যাতে মহাসড়কে উঠতে না পারে সে জন্য কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি তিনি এসব যানবাহনের জন্য আলাদা সড়ক বা লেন নির্ধারণ করার জন্য অনুরোধ জানান। একই কথা বলেছেন, বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুস্তম আলী খান।

সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবি: গতকাল শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সন্মেলনে বাংলাদেশ অটোরিকশা-অটোটেম্পো সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক গোলাম ফারুক বলেন, সম্প্রতি কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে সরকার মহাসড়কে অটোরিকশা-অটোটেম্পো চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ সিদ্ধান্ত খুবই অমানবিক। আমরা দীর্ঘদিন থেকে মহাসড়কে লেন সিস্টেম চালু করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করে আসছি। আমরা মনে করি লেন সিস্টেম চালু করলে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমবে এবং গাড়ি চলাচলেও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

গোলাম ফারুক আরো বলেন, আমরা বিশ্বাস করি সবদিক বিবেচেনা করে সরকার আমাদের এ দাবি অনতিবিলম্বে মেনে নেবে। অন্যথায় শ্রমিক মালিকরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে। আমাদের দাবি মানা না হলে আগামী ৪ আগস্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সরকারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে। ৮ আগস্ট জেলা সদরে মানববন্ধন করা হবে। ৯ থেকে ১১ আগস্ট জেলায় জেলায় সমাবেশ ও মিছিল করা হবে এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তায় ঢাকায় সমাবেশ করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা আবুল হোসেন, যুগ্ম-আহবায়ক ফুল মিয়া ভুঁইয়া প্রমুখ।