হঠাত সাংবাদিক নামধারী এরা কারা!

 

জীবননগর ব্যুরো: হঠাৎ করেই জীবননগর উপজেলায় ভুয়া সাংবাদিকের উদ্ভব হয়েছে। উপজেলার বেশ কিছু বেকার ভবঘুরে যুবক ধান্দাবাজির কৌশল হিসেবে কিছু আজগুবি নাম সর্বস্ব পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দুর্নীতির গন্ধমাখা অলিগলিতে হানা দিয়ে উপজেলায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। জীবনে কখনো কোনো পাঠকপ্রিয় প্রচার বহুল দৈনিক পত্রিকায় দায়িত্ব পালন না করলেও এদের রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেলের সামনে পেছনে মোটা হরফে সাংবাদিক ও প্রেস শব্দ জ্বলজ্বল করছে।

সম্প্রতি জীবননগর উপজেলায়ও রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল আটক করতে শুরু করেছেন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আর নিজেদের ব্যবহৃত রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরসাইকেল পুলিশের হাত থেকে রক্ষা করতে এসব হলুদ ও অপসাংবাদিকরা তাদের মোটরসাইকেলের সামনে ও পেছনে বড় অক্ষরে প্রেস লিখে চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে অনেক ভুয়া সাংবাদিক নিজের নিকট আত্মীয়ের আটককৃত মোটরসাইকেল ছাড়াতে নিজেকে বড় মাপের সাংবাদিক হিসেবে জাহির করে তদবির-বাণিজ্যে ব্যর্থ হয়ে পুলিশের সাথে খারাপ আচরণ করছে। ভুয়া সাংবাদিকদের এহেন কর্মকাণ্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং এসব ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন উপজেলার প্রকৃত সাংবাদিকরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় বর্তমানে অবৈধ সাংবাদিকের সংখ্যা প্রায় ত্রিশ ছুঁই ছুঁই। ভূইফোঁড় পত্রিকার নাম ব্যাবহার করেই পুরো উপজেলা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে গোটা ত্রিশেক যুবক। যাদের কেউই কোনো গ্রহণযোগ্য দৈনিকে ইতঃপূর্বে দায়িত্ব পালন করেনি। সাংবাদিক পরিচয়দানকারী এসব সাংঘাতিক অপতৎপরতা প্রদর্শনকারীদের কারণে পুরো সাংবাদিকতা পেশাটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে। তাদের অপতৎরতায় মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সহজলভ্য কাজ হলো সাংবাদিক হওয়া। যার জন্য কোনো যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন পড়ে না। সাংবাদিক বলতে সাম্বাদিক এবং প্রেসক্লাব বলতে ফ্রেচ ক্লাব উচ্চারণ করে এমন কয়েকজন যুবকও নিজদেরকে একলাফে দৈনিক/সাপ্তাহিক/পাক্ষিক/মাসিক পত্রিকার রীতিমতো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে উপজেলাব্যাপি হম্বিতম্বি করে বেড়াচ্ছে এবং এ পেশাকে কলুষিত করছে। এদের অপতৎপরতায় সাধারণ মানুষ রীতিমতো হতবাক। সচেতনমহল মনে করছেন, নাম সর্বস্ব পত্রিকার পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকতার নামে ভণ্ডামি করে বেড়ানো সম্পূর্ণ বেমানান কাজ। অবৈধ সাংবাতিকদের অপতৎপরতা বন্ধ করা এখন সময়ের অনিবার্য দাবি হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, সাংবাদিক নামধারী কিছু লোকের জন্য এ পেশার প্রতি সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা হারাচ্ছে। যারা সম্প্রতি এ পেশাকে কলুষিত করে এবং অপেশাদার মনোভাব তৈরি করে সাংবাদিকতা-বাণিজ্য চালু করেছে এদের চিহ্নিত করে সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত।