ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছাত্র রাজনীতির মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে হবে

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছাত্র রাজনীতির মর্যাদা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব ছাত্রলীগকে নিতে হবে। ছাত্রদের প্রতি মানুষের যে আস্থা ও বিশ্বাস ছিলো সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে। লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে জনগণের সেবায় কাজ করার জন্য ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রক্ষার জন্য এ সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশের ইতিহাসে প্রতিটি অর্জনের পেছনে ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে। গতকাল সোমবার বিকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত কমিটির নেতারা সৌজন্য সাক্ষাত্ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন। ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রধানমন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সাল থেকে ছাত্রলীগ দেশের জনগণকে মুক্তির পথ দেখিয়ে আসছে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের মাঝ থেকেই আগামী দিনে রাষ্ট্রপরিচালনা কারা করবে তা উঠে আসবে। তাই আদর্শ দিয়ে চলতে হবে। কারণ আদর্শ ও নীতি ছাড়া কোন নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারে না। লোভ, লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে জনগণের সেবা করতে হবে। এটাই জাতির পিতার আদর্শ।

ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ২৮তম জাতীয় সম্মেলনের কাউন্সিলররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। গণভবনের ব্যাংকুয়েট হল নেতাকর্মীদের পদভারে পূর্ণ হয়ে যায়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় অনুষ্ঠানস্থলে আসলে হলভর্তি নেতাকর্মীরা তুমুল করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান। গতকাল ছিল সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর মধ্যেই অনুষ্ঠানে প্রবেশ করেন শেখ রেহানার ছেলে রেদওয়ান সিদ্দিক ববি। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে আসলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ শক্তিশালী ছিলো বলেই অতীতের সকল চড়াই-উত্রাই পার করা সম্ভব হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আদর্শ নিয়েই সবাইকে তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আদর্শ নিয়ে সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। আদর্শহীন সংগঠন হল কাণ্ডারিহীন নৌকার মত। কোথায় ভেসে যাবে কেউ জানে না। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ ছিল বঙ্গবন্ধুর অগ্রগামী দল। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের মূল কথাটা হচ্ছে পড়াশোনা করতে হবে। নিজেকে সেভাবে গড়ে তুলতে হবে। উপযুক্ত নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য কিন্তু এটা বড়ই প্রয়োজন।

পরাজিত শক্তির দোসররা যাতে আর এদেশে মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সে ব্যাপারে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতার সাথে দেশকে ভালবাসতে হবে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মাঝখানে কিছু কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটে। কিন্তু তোমাদের মনে রাখতে হবে কেউ যদি কোন অন্যায় করে আমি কিন্তু প্রশ্রয় দেই না, দিবও না।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নেতৃত্ব নির্বাচন করায় ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটা দেশের সামনে একটা উদাহরণ। আপনারা দেশকে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশের একটি মাত্র গণতান্ত্রিক দল, সেটা হচ্ছে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ।

অনুষ্ঠানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওভারমায়ার, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ছাত্রলীগের সদ্যবিদায়ী সভাপতি এইচএম বদিউজ্জামান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম ছাড়াও ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।