বর্ষাকালে ক্রিকেট কেন? দিন অবশ্য বদলাচ্ছে

ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টটা এ অর্থে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন এক ঘটনা ছিলো। সেই প্রথম জুন-জুলাইতে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত হলো টেস্ট ক্রিকেট। আসলে টেস্ট বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দূরে থাক, এ বর্ষা মরসুমে বাংলাদেশে কখনো ঘরোয়া ক্রিকেটও খুব একটা অনুষ্ঠিত হয় না। মরসুম পরবর্তী ছুটির সময় এটা। এ সময়ে খেলা আয়োজন করলে যে শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ ম্যাচ ভেসে যাবে বৃষ্টিতে, তা আগে ভাগে আন্দাজ করা কঠিন কিছু নয়। তারপরও এ সময়েও কেন এবার একটার পর একটা টেস্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে?

সূচি তৈরিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড অনেকটাই নিরুপায় একটা অবস্থানে। যদিও হতাশা সৃষ্টির জন্য বড় দায় আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশের ওপরই বর্তায়। তা বোর্ড পরিচালক ও জাতীয় দলের ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজনও অস্বীকার করেন না। জেনেশুনে এমন ঘোর বর্ষাকালে খেলার সময়সূচি ঠিক করা উচিত হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে সুজন বলছিলেন, আসলে বড় দলগুলোর খেলার সময়সূচি মিলিয়েই আমাদের খেলার সময় নির্ধারণ করতে হয়। এক্ষেত্রে কিছু করার থাকে না আমাদের। এই পুরো ঘটনাটা ঘটেছে ২০১৪ সালে আইসিসির ভবিষ্যত সফরসূচি (এফটিপি) আইন বাতিল হয়ে যাওয়ায়। আগে আইসিসির মধ্যস্থতায় বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক সফরসূচি তৈরি হতো দু দেশের সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনা করে। কিন্তু গত বছর থেকে কার্যকর হওয়া নিয়মে বলা হয়েছে, এখন থেকে দু আয়োজক দেশই ঠিক করবে এফটিপি কী হবে। ফলে দুর্বল শক্তির দেশ বাংলাদেশের দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় বড় দেশগুলোর কাছ থেকে সফরের প্রতিশ্রুতি পেতে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) অত্যন্ত প্রশংসনীয়ভাবে অনেকক’টা সফরের প্রতিশ্রুতিও নিয়ে নেয় বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে।

যেহেতু আইসিসির মধ্যস্থতা নেই, তা বড় দেশগুলো তাদের সূচির আকর্ষণীয় সময়গুলো অন্য বড় দেশগুলোর বিপক্ষে খেলার জন্য রেখে দেয়। আর আমাদের ভাগে বরাদ্দ পড়ে এসব ‘অসময়’। এদিন অবশ্য বদলাচ্ছে। গত আট-নয় মাসে বাংলাদেশ নিজেই বড় দল হয়ে উঠছে। ফলে আশা করা যেতে পারে পরের দফা এফটিপির ক্ষেত্রে ৱ্যাঙ্কিঙে এগিয়ে থাকা দলগুলোর সাথে দরকষাকষির ক্ষমতাও বিসিবির বাড়বে।