টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে জীবননগরে ফসল বিনষ্ট

জীবননগর ব্যুরো: একদিকে টানা ১৫ দিন ধরে ভারী বর্ষণ, অপরদিকে ভারতের বানপুর ও টুংগি পাড়া হয়ে বাংলাদেশের চ্যাংখালী ও হরিহরনগর দিয়ে নেমে আসা উজানের পানিতে উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের প্রায় ৪শ হেক্টরসহ উপজেলার ১ হাজার ৮শ হেক্টর জমির ধানক্ষেত এবং ৫৫০ হেক্টর সবজিক্ষেত তলিয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার প্রায় ছোট-বড় ১শটি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১শ ১০ কেটি টাকা। এ কারণে কৃষক ও মৎস্যচাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বেনিপুর বাঁওড়ের পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ৮০ ভাগ ধানক্ষেত একেবারে তলিয়ে গেছে। বাকি ২০ ভাগ ধানের উপরিভাগ পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। কৃষকরা জানান, এ ২০ ভাগ ধানও এক সপ্তাহের মধ্যে পচে নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া ওই এলাকার হরিহরনগর, গয়েশপুর, চ্যাংখালী ও মেদিনীপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। মেদেনীপুর গ্রামের কৃষক মজিবর রহমান বলেন, এবার অন্যের ২ বিধা জমি বর্গা নিয়ে ধানের আবাদ করেছিলাম। কিন্তু ১৫ দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে উজানের পানি আসায় সব ধান ডুবে গেছে। একই কথা বলেন, ধানচাষি একই গ্রামের মফিজ উদ্দীন, রইসুল হক, বাহার আলী ও আবুল হাসেম। তাদের সবারই দাবি টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে উজানের পানি আসার কারণে সবার ধান ডুবে গেছে।

এ ব্যাপারে মেদিনীপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন জানান, ১৫ দিনের অবিরাম বর্ষণ এবং ভারত থেকে উজানের পানি আসায় এ এলাকার সমস্ত ধানক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। স্লুইচ গেট অকেজো থাকায় জমে থাকা পানি নামছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসসূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার ৬ হাজার হেক্টর আউশ ও ৩ হাজার ৫শ হেক্টর রোপা আমনের আবাদ হয় এবং ৮৫০ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়। কিন্তু টানা বর্ষণের কারণে উপজেলায় ১ হাজার হেক্টর আউশ ও ৮৫০ হেক্টর রোপা আমনক্ষেত তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, যদি দ্রুত পানি সরে যায় তাহলে ৩০ ভাগ ধানের খুব একটা ক্ষতি হবে না তবে ফলন একটু কম হবে।