মিরপুরে কলেজছাত্রী জবাই : পুরোনো জিডির সূত্রই প্রধান রহস্য

স্টাফ রিপোর্টার: রাজধানীর মিরপুরে কলেজছাত্রী আমেনা আক্তার রেশমা খুনের বেশ কিছুদিন আগেই তার মা মরিয়ম বেগম রূপনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে তার তৃতীয় সতীন খোদেজা বেগম ও প্রথম সতীনের ছেলে রবিন তাকে কয়েকবার মেরে ফেলার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন। পুরনো এ জিডির সূত্রই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের প্রধান রহস্য বলে মনে করছেন মিরপুর থানা পুলিশের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। এরই মধ্যে জিডির সূত্র ধরে পুলিশ রবিনকে গ্রেফতার করেছে। ওই বাসায় দারোয়ান মামুন ওরফে মিলনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। দুজনকে গতকাল শুক্রবার আদালতে হাজির করে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া খুনের ঘটনার কয়েক দিন আগে একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা নিয়ে রেশমার সাথে তার সৎ দু বোনের চুলোচুলির ঘটনাও ঘটে। এর মধ্যে পুলিশ পিংকি নামে এক বোনকে সন্দেহ করছে।

রেশমার বাবা আলমগীর হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম বেগম। মিরপুর ২ নম্বরের রাইনখোলা এলাকার একটি পাঁচ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে মরিয়ম ও রেশমার সাথে থাকতেন আলমগীর। এ ফ্ল্যাট থেকেই বৃহস্পতিবার দুপুরে রেশমার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ফ্ল্যাটটি রেশমাকে লিখে দেয়ার কথা ছিলো।

এদিকে কলেজছাত্রী খুনের এ মামলা থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও (ডিবি) তদন্ত করছে। মরিয়ম বেগম ডিবি পুলিশকে জানান, সুদের টাকার ব্যবসা, গ্রামের বাড়ির জমি বিক্রি করে এ ফ্ল্যাট কেনার জন্য তিনি টাকা দেন। ২৩ লাখ টাকায় দরদাম হওয়া ফ্ল্যাটের অর্ধেক টাকা এখনও বাকি রয়েছে। তিনি বলেন, ফ্ল্যাটের কারণেই তিনি তার মেয়েকে হারালেন।

তদন্ত সূত্র জানায়, রূপনগর থানায় করা জিডিতে নিহত রেশমার মা মরিয়ম অভিযোগ করেন, সতীনের ছেলে রবিনের স্বভাব খারাপ। অর্থ-বিত্তের ওপর তার খুব লোভ। এ রবিন ও সতীন খোদেজা তাকে এবং তার মেয়ে রেশমাকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তারা যে কোনো মুহূর্তে যেকোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে পারে। মিরপুর থানা পুলিশ রূপনগর থানায় দায়ের করা এ জিডির সূত্র ধরেই রেশমা হত্যার তদন্ত শুরু করেছে। আর তদন্তে বেরিয়ে আসছে পরিবারটির একাধিক বিয়ে আর ছাড়াছাড়ির কাহিনী।