হত্যার অভিযোগ তুলেও হঠাত বদলে গেলেন পিতা

স্বামী-শ্বশুরের নির্যাতনের পর গৃহবধূর বিষপান : আনাড়ি ডাক্তারের চিকিৎসা
স্টাফ রিপোর্টার: স্বামী-শ্বশুরের নির্যাতনের পর গৃহবধূ আফরোজা আক্তার কণার বিষপান করে। এরপর হাতুড়ে চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়। অবশেষে মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা বেওয়ারিশের মতো পড়ে থাকার পর গ্রহণ করেছে পিতাপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার।
মৃতদেহ গ্রহণের আগে আফরোজা আক্তার কণার পিতাপক্ষ তার স্বামী চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার হাঁপানিয়ার হাসান ও পিতা দীন মোহাম্মদের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুললেও শেষ পর্যন্ত অর্থের বিনিময়ে আপস করা হয়েছে বলে খবর রটে। আড়াই লাখ টাকায় রফা হওয়ার খবর মুখে মুখে ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত অবশ্য তার সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। টাকার বিনিময়ে আপস হলে কি তার সত্যতা নিশ্চিত করা যায়? অনেকে এরকম প্রশ্নও তুলেছে।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার হাপানিয়ার দীন মোহাম্মদের ছেলে হাসানের সাথে কুষ্টিয়া ইবির কন্দর্পদিয়ার কুরবান আলীর মেয়ে আফরোজা আক্তার কণার বিয়ে হয়। সংসারে এক সন্তানও আসে। তার বয়স এখন এক বছর ৪ মাস। গতকাল সকালে কণা স্বামীগৃহের গোয়ালঘর পরিষ্কারের সময় হাতে পলিথিনের ব্যাগ মুড়িয়ে গবর তোলে ঝুড়িতে। দৃশ্য দেখে শ্বশুর দীন মোহাম্মদ বলেন, ওইভাবে গবর পরিষ্কার করলে গোয়াল তো লক্ষ্মী ছাড়া হয়ে যাবে? এরই এক পর্যায়ে কণার স্বামী ঘরে আটকে মারধর শুরু করে। শ্বশুরও মারধর করে বলে অভিযোগ ওঠে। মারধরের পর ঘরে আটকে রাখা হয়। এরই এক পর্যায়ে কণা বিষপান করেছে বলে প্রতিবেশীদের জানায় হাসানসহ তার পরিবারের লোকজন। কোলে শিশুসন্তান রেখে কোনো মা কি বিষপান করতে পারে? এরকম প্রশ্ন উঠলেও সেদিকে তেমন কেউই কর্ণপাত করেনি। কণাকে নেয়া হয় আসমানখালীর আলী ডাক্তারের কাছে। তিনি ওয়াশ করেন। আনাড়ি হাতে ওয়াশের কারণে লাঞ্চে জমে পানি। অবস্থা বেগতিক দেখে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সদর হাসপতালে নেয়ার আধা ঘণ্টার মাথায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মারা যায় কণা। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, আনাড়ি হাতে ওয়াশের কারণেই মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েছে। লাশ ফেলে সটকে পড়ে স্বামী-শ্বশুরসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। দীর্ঘ সময় কণার লাশ বেওয়ারিশের মতো পড়ে থাকে। বিকেলে কণার পিতাপক্ষ লাশ দেখে হত্যার অভিযোগ তোলে। পুলিশে খবরও দেয়া হয়। পরে খানেকটা হঠাত করেই কণার পিতাপক্ষের মুখের বোল বদলে যায়। তারা লাশ নেয়ার জন্য তড়িঘড়ি শুরু করে। অপরদিকে গুঞ্জন ওঠে আড়াই লাখ টাকায় আপস হয়েছে।