চুয়াডাঙ্গার ভুয়া সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বজলুর রহমানের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ভারতের কথিত ডিগ্রিপ্রাপ্ত চুয়াডাঙ্গা পুরাতন হাসপাতালপাড়ার সর্বরোগের ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বজলুর রহমানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা করেছেন। ডাক্তার বজলুর রহমান গত রোববার উপজেলার শালিকা গ্রামের আসাদুজ্জামানের অসুস্থ শিশুকন্যাকে সুস্থ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৬ হাজার টাকা অগ্রিম দাবি করলে ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসী তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা শহরের পুরাতন হাসপাতালপাড়ার মৃত জবেদ আলীর ছেলে বজলুর রহমান (৬০)। তিনি নিজেকে ভারত থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে ডিগ্রিপ্রাপ্ত ডাক্তার হিসেবে দাবি করে দীর্ঘ ২৮ বছর বিভিন্ন গ্রামে রোগীদের সাথে চিকিৎসাসেবার নামে প্রতারণা করে আসছেন। তিনি শুধু নেহায়েত ডাক্তার না, রীতিমত সর্বরোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। এসএসসির গণ্ডি না পেরোনো বজলুর রহমান যাবতীয় গোপন সমস্যা, বাত-ব্যাথা, অর্শ্ব-ভগন্দর, পলিপাস, ক্যানসার, কিডনি রোগ, স্ট্রোকের রোগী, প্যারালাইসিস, হার্টের রোগী, হাঁপানি, টিবি, পুরাতন কাশি, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, পুরাতন আমশায়, লিভারের জটিল রোগ, ডায়াবেটিস, চোখ-কান-নাক-গলা, বি-ভাইরাসসহ যাতীয় কঠিন ও জটিল রোগের চিকিৎসা করেন। ২৮ বছর পূর্বে তিনি কি করতেন? জিজ্ঞেস করলে তিনি ডিসি কোর্টের পিয়ন ছিলেন বলে জানান। অসৎ আচরণের জন্য সে চাকরি হারাতে হয়েছে তাকে। এরপর তিনি বহু চিন্তা-ভাবনা করে রাতারাতি হয়ে গেলেন সর্বরোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। তার অপচিকিৎসা ও ভুল চিকিৎসায় গ্রামের অনেকের বড় ধরনের খেসারত দিতে হয়েছে। অসহায় গরিব রোগীদের চিকিৎসার নামে তাদেরকে সর্বস্বান্ত করেছে এ প্রতারক। চিকিৎসকের নামে তিনি যে একজন বড় ধাপ্পাবাজ সেটা গ্রামের অনেকেই উপলব্ধি করতে পেরেছে। গত পরশু দুপুরে গাংনীর শালিকা গ্রামের আসাদুজ্জামানের বাড়ি গিয়ে তার অসুস্থ শিশুকন্যাকে সুস্থ করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে অগ্রিম একবারে ৬ হাজার টাকা দাবি করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে গ্রামের প্রতারিত রোগীর আত্মীয় পরিজনরাও বিষয়টি জেনে যায়। তারা সকলে আসাদুজ্জামানের বাড়ি গিয়ে ভুয়া সর্বরোগ বিশেষজ্ঞ বজলুর রহমানকে আটক করে আসমানখালী ফাঁড়ি পুলিশের আইসি রবিউল ইসলামের হাতে তুলে দেন। তিনি আটক ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে গত রোববার আলমডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করেন। গতকাল আলমডাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফুর রহমান এক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন। পরে জরিমানার টাকা পরিশোধ করে প্রতারক ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবারের মত পার পেয়েছেন।