সন্দেহভাজন ১২ জঙ্গিকে তিন দিন করে রিমান্ড

স্টাফ রিপোর্টার: জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গত বুধবার রাজধানীর কয়েকটি স্থান থেকে গ্রেফতারর হওয়া ১২ জনকে তিন দিন করে রিমান্ড নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল শুক্রবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোল্লা সাইফুল আলম এ আদেশ দেন। আটক হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও বিস্ফোরক দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দারুস সালাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামিরা হলেন মাওলানা মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিম ওরফে বদিউল (৩৫), মুফতি জাফর আমিন ওরফে সালমান (৩৪), মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম ওরফে সাইদ তামীম (২০), মোশাররফ হোসেন (১৯), আবদুর রহমান বেপারী (২৫), আল-আমিন ওরফে ইব্রাহিম (২৮), মোজাহিদুল ইসলাম ওরফে নকিব ওরফে শরীফ ওরফে ইসমাইল (৩১), আশরাফুল ইসলাম ওরফে আবুল হাশেম (২০), রবিউল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে রবিউল (২৮), মো. হাবিব উল্লাহ (২৬), শহিদুল ইসলাম ওরফে সাগর (২৯) ও আলতাব হোসেন ওরফে আল মামুন (২৬)। এদের মধ্যে মাইনুল ইসলাম বাংলাদেশে একিউআইএসের প্রধান সমন্বয়কারী ও জাফর আমিন উপদেষ্টা বলে দাবি করছে ৱ্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (ৱ্যাব)।
ৱ্যাবের দাবি, এরা আল-কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) বাংলাদেশের সদস্য। একই সাথে এও বলছে, এরা হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) সদস্য। একিউআইএসে যোগদানের লক্ষ্যে সাংগঠনিক সক্ষমতা গড়ে তুলতে এরা ভিন্ন নামে সংগঠিত হচ্ছিল। এ ব্যাপারে ৱ্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হুজি-বির কারাবন্দী নেতা মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবুল জান্দাল কারাগারের ভেতর থেকে মুঠোফোন ও চিঠির মাধ্যমে আত্মগোপনে থাকা সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে এরা সংগঠনের নাম পরিবর্তন করে প্রথমে ‘দাওয়াতে তাবলীগ’ এবং পরে ‘৩১৩ বদরের সৈনিক’ নামে আত্মপ্রকাশ করার চেষ্টা করছিল। উপমহাদেশে আল-কায়েদার বিস্তার সামনে রেখে দেশে সর্বাত্মক কার্যক্রম শুরু হলে তারা একিউআইএসে যোগ দেবে এটাই ছিলো মূল লক্ষ্য। গতকাল বৃহস্পতিবার ৱ্যাব সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ৱ্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঈদুল ফিতরের পর রাজধানীতে বড় ধরনের নাশকতা করার লক্ষ্যে বেশ কিছু জঙ্গি ঢাকায় জড়ো হবে, কিছু জঙ্গি বরিশাল ও খুলনা রওনা হয়েছে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর মিরপুরে তাদের ভাড়া করা একটি বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে আড়াই লিটার সালফিউরিক অ্যাসিড, এক লিটার অ্যাসিটিন, এক কেজি গন্ধক, এক কেজি সালফার, ৪০০ গ্রাম পটাশিয়াম ক্লোরেট, দুই লিটার গ্লিসারিন, পাঁচ কেজি সোডিয়াম বাই কার্বনেট, পাঁচ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, ১৫টি বিস্ফোরক ডিভাইস, ৫৫০টি মার্বেল, চারটি চাকু, ছয়টি ছুরি, একটি চাপাতি, দুটি চায়নিজ কুড়াল, ১৬টি মোবাইল ফোন, এক কার্টন দেশলাই, ১০টি ঘড়ি, ১৪৯টি জিহাদি বই, ৩০টি প্রশিক্ষণ নির্দেশিকা ইত্যাদি।