বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা

 

বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অজ্ঞানপার্টি বা মলমপার্টি। এর আগেও এ চক্রের কবলে পড়ে যাত্রীরা সর্বস্ব খুইয়েছে, আলমসাধু কিংবা করিমন-অটোবাইক হারিয়ে অসুস্থ কিংবা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে চরম দুর্দশায় পতিত হয়েছেন অনেকেই। অশুভ তৎপরতাকে কঠোরভাবে দমন করার কোনো বিকল্প থাকা উচিত নয়। আসছে ঈদ। আর ঈদ এলে এ পার্টির অপতৎপরতা বহুলাংশে বেড়ে যায়। আর তাদের এ অপরাধপ্রবণতা অত্যন্ত আতঙ্কজনক পরিস্থিতিকেই নির্দেশ করে।

গত বৃহস্পতিবার দৈনিক মাথাভাঙ্গায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘চুয়াডাঙ্গায় পৃথক দুটি স্থানে অজ্ঞানপার্টির খপ্পরে পড়ে আলমসাধু খোয়ালো দু চালক’। ঈদ সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা। যখন যাত্রীবাহী বাস, ট্রেনে এবং রাস্তাঘাটে হকার কিংবা সহযাত্রী বন্ধু সেজে সাধারণ মানুষের সর্বস্ব কেড়ে নিতেও অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা দ্বিধাহীন, তখন পরিস্থিতি কতোটা ভয়ানক তা সহজেই অনুমান করা যায়। সঙ্গত কারণেই এ পরিস্থিতি নিরসনে প্রয়োজনে সরকারকে সর্বোচ্চ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। অনেক সময় যাত্রী সেজে আলমসাধু, করিমন, ইজিবাইক নিয়ে সটকে পড়ার ঘটনা নতুন নয়। সাধারণত ঈদ, পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও জাতীয় অনুষ্ঠান সামনে রেখে এদের বেপরোয়া হয়ে ওঠার বিষয়টি যেন নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়া কিংবা সাধারণ মানুষের কেনাকাটা করার উদ্দেশে টাকা নিয়ে বের হওয়ার সুযোগটিকেই কাজে লাগাতে চায় এরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের চোখ এড়িয়ে খুব সহজেই ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলেও সর্বস্ব কেড়ে নেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে উৎসবের আনন্দ পর্যবসিত হয় বিভীষিকায়। অথচ সারা বছর পরিশ্রম করে টাকা জমিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে মানুষ যখন আশায় বুক বাঁধছে, ঠিক এ সময়েই এদের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। আর এ পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কেননা এ অশুভ চক্র বার বার তাদের কর্মকাণ্ড চালানোর সাহস পায় কীভাবে? অজ্ঞানপার্টির সামগ্রিক কর্মকাণ্ড আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা অপরিহার্য। মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সঙ্গত কারণেই আসন্ন ঈদে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকার নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি রোধ করতে কোনো প্রকার নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করবে না এমনটি প্রত্যাশা। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অজ্ঞানপার্টির এ অশুভ তৎপরতাসহ যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে দেশের মানুষ। এ পরিস্থিতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।