চার ধাপে ভর্তির তিনটিতেই জরিমানা

 

স্টাফ রিপোর্টার: একাদশ শ্রেণিতে চার ধাপে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। গত রোববার মধ্যরাতে অনলাইনে আবেদনের ফল প্রকাশ করা হয়। এ সময় আলাদা জারি করা নির্দেশনায় এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী রোববার রাতে প্রকাশিত প্রথম মেধা তালিকায় বাছাইকৃতদের প্রথম ধাপে ভর্তি করা হবে। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রম সোমবারই শুরু হয়েছে। ২ জুলাই পর্যন্ত প্রথম ধাপের এ ভর্তি কার্যক্রম চলবে। তবে এজন্য ক্লাস শুরুর সময় পেছাবে না। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১ জুলাই ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে।

চার ধাপে ভর্তিকৃতদের মধ্যে পরের তিন ধাপের শিক্ষার্থীদের জরিমানা বা বিলম্ব ফি গুনতে হবে। এ ব্যাপারে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের অবশ্য আপত্তি রয়েছে। তারা বলছেন, সরকারের ভুলের কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব ও বিপত্তি ঘটেছে। এর দায় শিক্ষার্থীরা নেবে কেন? তারা বিলম্ব ফি মওকুফের দাবি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, যারা এ সময়ের মধ্যে ভর্তি হবে, তাদের নিয়েই ১ জুলাই ক্লাস শুরু করা হবে। আর ভর্তি প্রক্রিয়ার ভুলের জন্য শিক্ষার্থীরা কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী প্রথম ধাপে প্রথম মেধা তালিকার শিক্ষার্থীদের ভর্তি শেষ হলে দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে ৬ জুলাই। এরপর তৃতীয় ধাপে রিলিজ স্লিপে এবং শেষ ধাপে আবেদন না করা ও ভর্তির বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে।

নির্দেশনায় বলা হয়, প্রথম মেধা তালিকায় উত্তীর্ণদের বৃহস্পতিবারের (২ জুলাই) মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তি ফরম পূরণ করে শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা সাপেক্ষে ভর্তি হতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বিষয়টি অবশ্যই অনলাইনে নিশ্চিত করতে হবে। অনলাইনে নিশ্চিত করার মাধ্যমে বোর্ড প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থী এবং খালি আসনের সংখ্যা (গ্রুপ, শিফট এবং ভার্সনভিত্তিক) বের করবে। এরপর অনলাইনে এ কলেজভিত্তিক খালি আসনের সংখ্যা প্রকাশ করা হবে।

এ অবস্থায় যেসব নির্বাচিত শিক্ষার্থী পছন্দের কলেজ পায়নি, তাদের পছন্দ তালিকায় দেয়া ওপরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার (মাইগ্রেশন) সুযোগ দেয়া হবে। এক্ষেত্রে যারা প্রথমে পাওয়া কলেজে ভর্তি হবে তারা এ সুযোগ পাবে। তাই মাইগ্রেশন করতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের এ পর্যায়ে এসে পুনরায় অনলাইনে প্রকাশিত কলেজের শূন্য আসন দেখে নিজ নিজ অ্যাপ্লিকেশন আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সম্মতি/অপশন প্রদান (আবেদন) করতে হবে।

প্রথম মেধা তালিকার ভর্তি কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর যেসব শিক্ষার্থী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের (মাইগ্রেশন) অপশন প্রদান করবে এবং যারা এখনও কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি- এ দু ক্যাটাগরির শিক্ষার্থীদের ফল তৈরি করা হবে। ৬ জুলাই এ ফল বা দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। দ্বিতীয় মেধা তালিকা এবং মাইগ্রেশনপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ৭ ও ৮ জুলাই বিলম্ব ফিসহ ভর্তি হতে হবে।

দ্বিতীয় মেধা তালিকা এবং মাইগ্রেশনপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তি শেষ হলে আবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (গ্রুপ, শিফট এবং ভার্সনভিত্তিক) শূন্য আসনের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করা হবে। এরপর এ পর্যন্ত যারা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়নি বা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়নি, তাদের রিলিজ স্লিপধারী হিসেবে গণ্য করা হবে। তৃতীয় ধাপে এসব শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খালি আসনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আগের মতোই একজন সর্বোচ্চ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিকল্প দিয়ে ৯ ও ১০ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন করবে। এক্ষেত্রে কোনো আবেদন ফি প্রদান করতে হবে না। রিলিজ স্লিপধারী প্রার্থীদের আবেদনের ফল ১১ জুলাই প্রকাশ করা হবে। ১২ জুলাইয়ে বিলম্ব ফিসহ এসব শিক্ষার্থীকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।

চতুর্থ ধাপে নতুন আবেদনকারী ছাত্রছাত্রী অর্থাৎ যেসব শিক্ষার্থী আগে অনলাইন বা এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করেনি- সেসব শিক্ষার্থী অনলাইনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য আসন দেখে ১৩ থেকে ২১ জুলাইয়ের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করবে। তারা অনলাইনে সর্বোচ্চ ৫টি এবং এসএমএসের মাধ্যমে একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পছন্দক্রম দিতে পারবে। এদের আবেদনের ফল ২৩ জুলাই প্রকাশ করা হবে। ২৫ ও ২৬ জুলাই বিলম্ব ফিসহ এসব শিক্ষার্থীকে ভর্তি হতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে কলেজগুলোর জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রথম মেধা তালিকায় ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বোর্ডের প্রাপ্য ফি সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাতে হবে। এজন্য বিলম্ব ফি নেয়া হবে না। দ্বিতীয় মেধা তালিকা, রিলিজ স্লিপধারী ও নতুন (চতুর্থ ধাপে আবেদনকৃত শিক্ষার্থী) ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের বোর্ডের প্রাপ্য ফি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাতে হবে। এক্ষেত্রে বিলম্ব ফি দিতে হবে। শুধু ঢাকা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা ভর্তির সময় অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সাথে অনলাইনে প্রাপ্ত একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট জমা দেবে। অন্য বোর্ডের শিক্ষার্থীদের মূল ট্রান্সক্রিপ্ট দিতে হবে।