এক বছরেও ধরা পড়েনি আতিয়ার

দর্শনা আজমপুরে জামাইয়ের হাতে শাশুড়ি খুন

 

দর্শনা অফিস: দর্শনা আজমপুরে মেয়ের তালাকপ্রাপ্ত স্বামীর হাতে তহমিনা হত্যাকাণ্ডের এক বছর পেরিয়ে গেছে। টানা এক বছরেও পুলিশ অভিযুক্ত খুনি আতিয়ার রহমানকে গ্রেফতার করতে পারেনি। আতিয়ার বহাল তবিয়তেই ঘুরছে নিজ এলাকায়। বছর আটেক আগে দর্শনা পৌর এলাকার আজমপুর মসজিদপাড়ার আব্দুল কাদেরের একমাত্র মেয়ে জোসনা খাতুনের বিয়ে হয় যশোর চৌগাছা উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের গুয়াতলি গ্রামের শের আলীর ছেলে আতিয়ার রহমানের সাথে। জোসনা ও আতিয়ার সম্পর্কে মামাতো-ফুপাতো ভাইবোন হলেও নানা কারণে বিয়ের পর থেকে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। মাদকাসক্ত আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ থাকায় বিয়ের বছর চারেকের মাথায় জোসনা স্বেচ্ছায় বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটায়। এরপর থেকেই আতিয়ার ক্ষিপ্ত হয়ে বেশ কয়েকবার জোসনাকে অপহরণের অপচেষ্টায় ব্যর্থ হয়। গত বছরের ২৬ জুন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আতিয়ার তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে সশস্ত্র অবস্থায় মাইক্রোবাসযোগে ঢোকে আব্দুল কাদেরের বাড়িতে। জোরপূর্বক জোসনাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা চালায় আতিয়ার। বাধা দেয়ায় জোসনার মা তহমিনাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আতিয়ার ও তার সন্ত্রাসী বন্ধুরা। জোসনা ও তার পরিবারের লোকজনের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসার আগেই তহমিনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মাইক্রোবাসের চাকার নিচে ফেলে পিষ্ট করে মাইক্রোবাসে জোসনাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায় আতিয়ার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। প্রতিবেশীরা তহমিনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য নেয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালে নেয়ার আগেই রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান তহমিনা। ওই রাতেই দামুড়হুদা ও দর্শনা আইসি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে চৌগাছা পাচনয়না গ্রামের হযরত আলীর বাড়ি থেকে জোসনাকে উদ্ধার করে। ওই রাতেই আব্দুল কাদের বাদী হয়ে আতিয়ার, লতিফ, আ. গণি, মোমিন এবং আনোয়ার হোসেন আনুর বিরুদ্ধে দামুড়হুদা থানায় হত্যা ও অপহরণ মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১০ আগস্ট দর্শনা আইসি পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাদেখানপুর থেকে আনুকে গ্রেফতার করেছে। এছাড়া আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করে গনি, লতিফ ও মোমিন। বিজ্ঞ আদালত জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানের আদেশ দেন।

এদিকে তহমিনা হত্যাকাণ্ড মামলার এক বছর পেরিয়ে গেলেও প্রধান আসামি আতিয়ার রহমানকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে আতিয়ার নিজ বাড়িতেই বহাল তবিয়তেই রয়েছে। মামলা তুলে নেয়ার জন্য কাদের ও তার পরিবারের সদস্যকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে আতিয়ার। কাদের ও তার পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি আমরা। আতিয়ার গ্রেফতার না হওয়ায় পর্যন্ত আতঙ্ক কাটছে না আমাদের। বিষয়টির প্রতি নজর দেয়ার চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করা হয়েছে।