চুয়াডাঙ্গায় টিসিবির ১১ ডিলারের কেউই পণ্য তোলেননি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারি উদ্যোগ

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় পবিত্র রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ডিলারের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব ট্রাকে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম না থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণ হুমকির মুখে পড়েছে। জেলায় ১১ জন টিসিবি’র ডিলার থাকলেও কেউ খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছেন না। এর ফলে রমজান মাসে বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখতে সরকারের নেয়া উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। বিভিন্ন মহল থেকে এসব ডিলারের লাইসেন্স বাতিলসহ নতুন ডিলার নিয়োগের দাবি উঠেছে।

চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ১১ জন টিসিবি’র ডিলার রয়েছেন। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদরের সরোজগঞ্জ বাজারের এগ্রো বিজনেসের মেসার্স আজিজুল হক, তালতলার মেসার্স স্বপ্ন কনস্ট্রাকশন, জীবননগর বাজারের মেসার্স সাগর কুমার বিশ্বাস ও চ্যাংখালী রোডের মেসার্স সাইদুর রহমান, আলমডাঙ্গার মেসার্স কাকুলী ট্রেডার্স, মেসার্স আলম ট্রেডার্স ও মেসার্স হেলাল ট্রেডার্স এবং দামুড়হুদার দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের মেসার্স নিতুন ট্রেডার্স, দর্শনা রেল বাজারের মেসার্স আব্দুস ছাত্তার, জুড়ানপুর গ্রামের মেসার্স মোখলেছুর এন্টারপ্রাইজ ও দশমীর মেসার্স জব্বার এন্টারপ্রাইজ। নির্বাচিত ডিলারগণ গত ৪ জুন হতে আগামী ১৬ জুলাই পর্যন্ত (শুক্রবার বাদে) ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। প্রতি ডিলারগণ প্রতিদিন চিনি ৪০০ থেকে ৫০০ কেজি ভোক্তামূল্য প্রতিকেজি ৩৭ টাকা, পেট বোতল সয়াবিন তেল ২০০ থেকে ৪০০ লিটার ভোক্তামূল্য ফ্রেস ৫ লিটার পেট বোতল প্রতি লিটার ৮৮ টাকা, ফ্রেস/পুষ্টি ১ লিটার ৮৯ টাকা, মশুর ডাল নেপালি ১৫০ থেকে ২০০ কেজি ভোক্তা মূল্যে ১০৩ টাকা, ছোলা ৩০০ থেকে ৫০০ কেজি ভোক্তা মূল্যে ৫৩ টাকা ও খেজুর ৫০ কেজি ভোক্তা মূল্য প্রতিকেজি ৮০ টাকা দরে বিক্রয় করার সিদ্বান্ত রয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশনের প্রধান কর্মকর্তা (সিএমএস ও বিওপি) মো. শাহাবুদ্দিন স্বাক্ষরিত এসব নির্দেশনা জেলা প্রশাসক বরাবর গত ২ জুন এক পত্র পাঠিয়েছেন। এসব নির্দেশনার পরও চুয়াডাঙ্গা জেলার ১১টি ডিলারের কেউ চলতি রমজান মাসে টিসিবির মালামাল উত্তোলন করেননি ও বিক্রয় করছেন না। ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে না বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন।

এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গা টিসিবির ডিলার আলম হোসেন জানান, অসুস্থ থাকায় গত বছর ও এ বছরসহ ২ বছর টিসিবির মালামাল উত্তোলন করিনি। দর্শনার টিসিবির ডিলার আব্দুস ছাত্তার জানান, যেসকল মালামালের চাহিদা রয়েছে সেসকল মালামাল টিসিবি সরবরাহ করে না। কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি মানিক আকবর জানান, টিসিবির মালামাল উত্তোলন না করলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। ফলে ওই সকল ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া উচিত। জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেন বলেন, টিসিবি ডিলার নিয়োগ করেই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছে। ডিলার নিয়োগের পাশাপাশি সঠিক তদারকি না থাকায় ডিলাররা মালামাল তুলছেন না। এতে সরকারের প্রচেষ্টা মাঠ পর্যায়ে এসে শেষ হয়ে যাচ্ছে।