রহস্য ঘনীভূত হলেও পুলিশের দাবি শিগগিরই বেরোবে থলের বিড়াল

আলমডাঙ্গার আইলহাস ও রায়লক্ষ্মীপুরের দুজন অপহরণ : পৃথক দুটি মামলা

 

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গা আইলহাসের স্কুলছাত্র হাকিম ও তার মামাতো ভগ্নিপতি রায়লক্ষ্মীপুরের গাফফার আহরণ রহস্যের জট খোলার বদলে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। যদিও পুলিশ বলেছে, রহস্যের ভেতরে লুকিয়ে থাকা রহস্যও এখন পুলিশের নখদর্পণে। ধৈর্য ধরুন, শিগগিরই বের হবে থলের বিড়াল। অপরদিকে অপহরণের পর বাড়ি ফেরা হাকিম বলেছেন, তাকে তার মামাতো ভগ্নিপতি গাফফার মোবাইলফোনে ডেকে ঝিনাইদহে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে। গাফফার ও ভুলটিয়ার রিয়াজুল ঝিনাইদহে নেয়ার পর কিছু একটা খাওয়ায়। এরপর কী হয়েছে জানিনে। যখন জ্ঞান হলো, তখন দেখি বাড়িতে। বাড়ির লোকজন বললো, আমি ৭ দিন ধরে বাইরে ছিলাম। আমাকে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়া হয়েছে।

হাকিমের এসব কথায় পুলিশ নতুন করে ধন্ধে পড়েছে। কারণ, গাফফার বাড়ি ফেরেনি। তার পিতা ইসমাইল হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অপহরণ মামলা করেছেন। এ মামলায় আইলহাসের বিস্কুট ও পিয়ার আলীকে গ্রেফতার দেখিয়ে গতপরশু আদালতে সোপর্দ করে সদর থানা পুলিশ। হাকিমকেও সদর থানায় নিয়ে দুদিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। গতকাল তাকে আদালতে নেয়া হয়। হাকিমের জবানবন্দি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ড. এবিএম মাহমুদুল হক জবানবন্দি রেকর্ড করেন বলে জানা গেছে। তবে জবানবন্দিতে স্কুলছাত্র হাকিম যা বলেছে তা বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি। পরে হাকিমকে তার পিতার জিম্মায় দেয়া হয়। হাকিম পিতার সাথে বাড়ি ফেরে। এদিকে হাকিমের পিতা শাহাবুদ্দিন গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় ছেলের বয়ান অনুযায়ী গাফফার ও ভুলটিয়ার রিয়াজসহ গাফফারের পিতাকেও দোষারোপ করা হয়েছে। হাকিমের পিতা শাহাবুদ্দিন বলেছেন, ১১ জুন ছেলে অপহরণ হলো। ফোনে হাকিম ও গাফফারের মুক্তিপণ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়া হয়। গাফফারের মোবাইলফোন দিয়েই মুক্তিপণের টাকা দাবি করা হয়। দু পরিবার যুক্তি করে ২৫ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে মুক্ত করার জন্য সরোজগঞ্জে আসা হয়। ১৬ জুন মুক্তিপণের টাকা গাফফারের পিতা ইসমাইল হোসেন নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে গিয়ে হাকিমকে ফিরিয়ে আনে। অথচ গাফফার বাড়ি না ফেরায় তার পিতা অপহরণ মামলা করেছেন।

ইসমাইল হোসেনের সাথে গতপরশু যখন কথা হয় তখন তিনি বলেন, দুজনের মুক্তিপণ বাবদ প্রথমে মোবাইলফোনে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এরপর দর কষাকষি করে কমিয়ে আনা হয় ৫০ হাজারে। এ টাকা নিতে ঝিনাইদহের গান্না বাজারের এক ব্যক্তি হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হাজির হলো। তার কাছে টাকা দেয়া হয়। এরপর ঝিনাইদহ বাস টার্মিনালের নিকটস্থ একটি চায়ের দোকান থেকে হাকিমকে উদ্ধার করা হয়। গাফফারকে পাওয়া যায়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই জিয়াউর রহমান বলেছেন, অপহরণ রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। পৃথক দুটি মামলা হলেও শেষ পর্যন্ত থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়তে যাচ্ছে বলে আমরা আশা করছি। আর একটু অপেক্ষা করতে হবে। রহস্যের মধ্যে লুকিয়ে থাকা রহস্য শিগগিরই প্রকাশ্যে এসে যাবে।