বন্দুকযুদ্ধ : আন্তঃজেলা ডাকাতদলের ৫ সদস্য গুলিবিদ্ধ!

মাগুরা-যশোর সড়কে ডিবি সেজে ডাকাতদলের বসানো চেকপোস্টে পুলিশের অভিযান

 

স্টাফ রিপোর্টার: মাগুরা-যশোর সড়কের খাজুরা ভাটার আমতলা এলাকায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে ডাকাতদলের বসানো চেকপোস্টে পুলিশি অভিযানে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে এ বন্দুকযুদ্ধে বিভিন্ন জেলার ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

পুলিশের তরফে এ তথ্য দিয়ে বলা হয়েছে, এরা আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্য। তবে গুলিবিদ্ধরা ভিন্ন তথ্য দিয়ে বলেছে, খুলনা থেকে ঢাকায় ফেরার পথে পুলিশ আটক করে টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে মাঠে নিয়ে গুলি করেছে। এরা হলো- মুন্সিগঞ্জ জেলার লৌহজংয়ের দক্ষিণ মেহেনীপুরের আবু তাহেরের ছেলে আব্দুল হাই (৪০), খুলনা ডালমিল পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার আকবর আলীর ছেলে ফারুক ওরফে বাদশা (৪৫), ঢাকার সাভার বারকুদা এলাকার নবাব আলীর ছেলে আনিসুর রহমান (৪২), ঝালকাঠির কাঠালিয়ার উত্তর চেচরি এলাকার আলমগীর হোসেনের ছেলে হাসান (২৪) এবং সিলেটের সিলাঘাট এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে রাজিব হোসেন (২৯)। পুলিশ দাবি করেছে আহতরা সকলেই আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্য।

যশোর সহকারী পুলিশ সুপার মীর সাফিন মাহমুদ জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে যশোর-মাগুরা সড়কের খাজুরা ভাটার আমতলা এলাকায় ডিবি পুলিশের পরিচয়ে একদল ডাকাত চেকপোস্ট বসায়। এ খবর জানতে পেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। ডাকাতরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ ও হাত বোমার বিস্ফোরণ  ঘটায়। এতে খাজুরা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মাসুদসহ চারজন আহত হন। পরে পুলিশও পাল্টা গুলিবর্ষণ করলে ডাকাতদের মধ্যে ৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। আরও কয়েকজন পালিয়ে যায়। পরে তাদের কাছ থেকে ১টি বিদেশি তৈরি পিস্তল, ১টি পাইপগান, ১টি ওয়ান শুটারগান, ৩ রাউন্ড গুলি, ১টি চাপাতি, ১টি ধারালো ছুরিসহ ডিবি পুলিশের ব্যবহৃত পোশাকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে এসআই মাসুদ বাদী হয়ে যশোর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

এদিকে হাসপাতলে ভর্তি গুলিবিদ্ধরা জানান, তারা খুলনার জনৈক শামিমের আমন্ত্রণে ঢাকার রিপনের সাথে গত ১৬ জুন সুন্দরবন দেখার উদ্দেশে খুলনা যান। সেখানে দুদিন থাকার পর ১৮ জুন সকালে একটি মাইক্রোবাসযোগে ঢাকার উদ্দেশে ফিরছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে খাজুরা পুলিশ ফাঁড়ির কাছে পৌঁছুলে পুলিশ তাদের গতিরোধ করে। এরপর তাদেরকে তল্লাশি চালিয়ে কোনোকিছু না পেয়ে ছেড়ে দেয়। পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেয়ে খাজুরা পাম্পে ঢোকে তেল নেয়ার জন্য। তেল নিয়ে চলে যাবার সময় পুলিশ  আবার তাদেরকে আটক করে। এ সময় খুলনার শামিম ও ঢাকার রিপনসহ মাইক্রোবাসে মোট আটজন ছিলো। আটকের পর শামিম, রিপনসহ তিনজন পুলিশের সাথে গোপন আলাপ ও বিশেষ রফা করে চলে। পুলিশ মাইক্রেবাসসহ ৫ জনকে আটক করে খাজুরা ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সারাদিন ফাঁড়িতে আটক রেখে এ আই মাসুদ তাদের সাথে দেন দরবার শুরু করেন। আহতদের দাবি, এসআই মাসুদ তাদের কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। তারা টাকা দিতে অস্বীকার করলে রাত সোয়া ২টার দিকে একটি মাঠের মধ্যে নিয়ে পুলিশ ৩ জনের পায়ে ও ২ জনের হাতে গুলি করে।

Leave a comment