স্বাধীনতা যুদ্ধে ব্রিটেনের অবদানে বাঙালি জাতি কৃতজ্ঞ : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ব্রিটেনের অবদানের কথা আবারও কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত সোমবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তার সম্মানে এক সভায় তিনি এমপিদের কাছে এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে পাক বাহিনীর গণহত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ এবং মা-বোনদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ সরকার ও এ দেশের জনগণ যেভাবে আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে শেষ দিন পর্যন্ত সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, তার জন্য বাঙালি জাতি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। ব্রিটিশ এমপিদের বিভিন্ন সময় তার প্রতি সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে সামরিক সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে দেশে ফিরে যেতে বাধা দিলে ব্রিটিশ এমপিরা বিভিন্ন জায়গায় তার জন্য লবিং করেন। সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। বিশ্ব জনমত গড়ে তোলেন। ফলে তিনি সেই সময় দেশে ফিরে নির্বাচনে অংশ নিতে পেরেছিলেন। শেখ হাসিনা ব্রিটিশ এমপিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, বাংলাদেশেও ওয়েস্ট মিনিস্টার ধাঁচের গণতন্ত্র চর্চা করা হচ্ছে। সবগুলো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। হাউস অব কমন্সে অল পার্টি পার্লামেন্টারিয়ান গ্রুপ তার সম্মানে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির সভাপতি লেবার পার্টির সিনিয়র এমপি কিথভাজ এর আয়োজক ছিলেন। অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত তিন এমপি রুশনারা আলী, ড. রূপা আশা হক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা হাউস অব পার্লামেন্টে পৌঁছুলে সংসদের স্পিকার জন বারকো তাকে স্বাগত জানান। ৩০ জন এমপি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা তাদের সাথে পরিচিত হন এবং কুশলাদি বিনিময় করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে তার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত হবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা। ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি ধর্মের মানুষ যাতে স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারেন, সে স্বীকৃতি রয়েছে আমাদের সংবিধানে।

ব্রিটিশ এমপিরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানে টিউলিপ সিদ্দিক এমপি বলেন, তিনি খালার কাছ থেকে রাজনীতির অনেক কিছু শিখেছেন। তার এই শিক্ষা গত ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে কাজে লেগেছে। অনুষ্ঠানের আয়োজক হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির সভাপতি কিথভাজ এমপি বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে আজকের এই অনুষ্ঠানটি করতে পারায় আমরা সম্মানিত বোধ করছি। কনজারভেটিভ পার্টির এমপি আন মেইন ব্রিটেন-বাংলাদেশের দীর্ঘ দিনের পারস্পরিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর আরও দৃঢ় হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন।

হাউস অব কমন্সের এই অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধামন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়, তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, টিউলিপ সিদ্দিক এমপির ভাই রেজওয়ান সিদ্দিক ববি প্রমুখ। গত সোমবার শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নেতাদের সাথে দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে মতবিনিময় করেন। আজ বুধবার বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।

Leave a comment