চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌর কলেজে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষার নামে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বেলা ২টার দিকে প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাজিবুল ইসলাম উপস্থিত হলে কোনো প্রশ্নপত্র না দিয়ে এবং মৌখিক কোনো প্রশ্ন না করে তার সম্মুখে মার্কশিটে শূন্য দেন ওই পরীক্ষার এক্সটারনাল সিরাজুল ইসলাম।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার ছিলো এইচএসসি জীববিজ্ঞান বিষয়ের প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা। পরীক্ষার পূর্বে পৌরকলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয় প্রাকটিক্যাল পরীক্ষায় প্রতি বিষয়ে ১শ করে টাকা নেয়া হবে। কিন্তু তা না করে অধ্যক্ষ শাহাজাহান আলী বিশ্বাস এক্সটারনালের সাথে গোপনে পরামর্শ করে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে খামের ভেতরে ৫শ টাকা করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সাজিবুল ইসলাম অভিযোগ করে বলে, আমাকে প্রশ্নপত্র না দিয়ে এবং মৌখিক কোনো প্রশ্ন না করে মার্কশিটে শূন্য দিয়ে এক্সটারনাল বলেন, সন্ধ্যায় খামের ভেতরে ৫শ টাকা নিয়ে প্রিন্সিপালের সাথে দেখা করবি কাজ হয়ে যাবে। ফুল নম্বর দিয়ে দেবে। এতে আমি ক্ষুব্ধ হই এবং জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিককে বিষয়টি অবহিত করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক, সহসভাপতি মাকছুদুল হাসান, ক্রীড়া সম্পাদক ফিরোজ জোয়ার্দ্দার, প্রচার সম্পাদক আব্দুর রহমান, স্কুল ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রাজু, সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানিম হাসান তারেক, ছাত্রলীগ নেতা শিমুল, খালিদ, টোকন, মোমিন, শিকদার, রানা, হিমেলসহ প্রমুখ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ পৌরকলেজে উপস্থিত হন।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মোহাইমেন হাসান জোয়ার্দ্দার অনিক বলেন, আমি বিষয়টি জানার সাথে সাথে বৃষ্টির মধ্যে পৌরকলেজে চলে আসি। বিষয়টি অধ্যক্ষ স্যারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। শিক্ষা নিয়ে যারা ব্যবসা করেন তারা বিবেকহীন। আমি পরীক্ষা শেষে কতিপয় কক্ষে গিয়ে বিষয়টি ছাত্র-ছাত্রীদের জিজ্ঞেস করলে তারা সবাই একইভাবে টাকা দিয়েছে বলে আমাকে জানায়। আমি অধ্যক্ষ স্যারকে আদায়কৃত অতিরিক্ত টাকা পরীক্ষার্থীদের ফেরত দেয়ার জন্য বলেছি।
এ বিষয়ে পরীক্ষার এক্সটারনাল সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি তো বাইরে থেকে এসেছি, আমি তো পরীক্ষার্থীদের কাউকে চিনি না। আমি কাউকে কোনো টাকার কথা বলিনি। পৌর কলেজের অধ্যক্ষ শাহাজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি বিষয়টি সম্পর্কে কিছুই জানি না। ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা পরীক্ষার্থীদের কাছে বিষয় প্রতি ১শ টাকা করে নিচ্ছি। পৌর কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মুন্সি আলমগীর হান্নান বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। যারা প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ কোনো শিক্ষকের জন্য কলেজের বদনাম হবে তা আমরা হতে দেবো না।