স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দল হিসেবে টিকে থাকাই এই মুহূর্তে জামায়াতের চাওয়া। এজন্য আপাতত কোনো আন্দোলন নয়, কেবল সংগঠন নিয়েই ভাবছে দলটি। দলটির দায়িত্বশীল সূত্রে বিষয়টি স্বীকার করে বলা হয়, কারাবন্দি শীর্ষ নেতারাও এমন বার্তা দিয়েছেন সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের। দলের বড় কোনো বিপর্যয়েও কঠিন সিদ্ধান্তে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
জামায়াতের দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, নানা কারণে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আক্ষরিক অর্থেই সংকটময়। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা, কারাগারে আটক দলের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সারির নেতাসহ তৃণমূলের প্রায় আট হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকের মুক্তি এবং সাংগঠনিক ভিত মজবুত করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। এ জন্য বড় কোন ইস্যু সৃষ্টি না হলে নিকট ভবিষ্যতে মঞ্চ-ময়দানের কোন কর্মসূচি দিতে রাজি নয় দলটির নীতিনির্ধারকরা। জামায়াত নেতাদের মতে, চলমান পরিস্থিতিতে একাকী আন্দোলন করে কোনো ফল পাওয়া যাবে না। তাই একক আন্দোলনের কোন চিন্তা আপাতত জামায়াতের মাথায় নেই। ওদিকে জোটে থাকা না থাকা নিয়েও জামায়াতের তেমন ভাবনা নেই। তারা বলেন, নিজ থেকে জামায়াত জোট ভাঙবে না বা জোট ছেড়ে যাবে না। জোট ভাঙার বদনাম মাথায় নিতে চায় না তারা। তবে জোটের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের বাদ দেয়া হলে আপত্তি করবে না। এ নিয়ে সাম্প্রতিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে তারা মনে করেন, কৌশলগত কারণে বিএনপিও জোট ভাঙার ঝুঁকি নিতে চায় না। তারা চায় সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিলে দলটি আপনা আপনি জোটছাড়া হবে। সেক্ষেত্রে বিএনপির সাথে সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা থাকবে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বরাবর কৌশলী ভূমিকায় আছে সরকার। জামায়াত নেতাদের মতে, সরকার চায় প্রায় একই মতাদর্শের এ দু রাজনৈতিক দলের মধ্যে কেবল ভাঙন সৃষ্টি নয়, রাজনৈতিক বৈরিতাও তৈরি করার। যা ভোটের রাজনীতিতে কাজে লাগবে। তাই বিএনপি ঘোষণা দিয়ে জামায়াতকে জোট থেকে বাদ দিলে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়বে দুই দলের সাধারণ কর্মী সমর্থক এমনকি ভোটারদের মাঝেও। আগামী নির্বাচনে যার সুবিধা ভোগ করবে আওয়ামী লীগ। তাই নানা মহলের দোহাই দিয়ে সরকার জামায়াতকে বিএনপি থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় এমন ধারণা তাদের।