আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়ে পার পেলেন দামুড়হুদার এসিল্যান্ড

 

স্টাফ রিপোর্টার: আদালতের আদেশ অমান্য করার দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন দামুড়হুদার এসি ল্যান্ড ফরিদুর রহমান। তিনি আদালতের কাছে স্বশরীরে হাজির হয়ে ক্ষমা চেয়ে নির্ধারিত দিনের আগেই অব্যাহতির আবেদন করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দামুড়হুদার (ভারপ্রাপ্ত) সিনিয়র সহকারী জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম তাকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

আদালতসূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার ফকির মোহাম্মদ নামের একজন ২০১০ সালে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৩ সালের ১৭ জানুয়ারি ফকির মোহাম্মদ তার পক্ষে রেকর্ড সংশোধনের রায় ও ডিক্রি পান। পরবর্তীতে ওই বছরের ২৫ জুলাই তার অনুকূলে চূড়ান্ত রায় পান তিনি। ফলে রেকর্ড সংশোধনের জন্য ফকির মোহাম্মদ ২৯ আগস্ট দামুড়হুদার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে আবেদন করেন। কিন্তু এসিল্যান্ড আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেন। রেকর্ড সংশোধন না করে দিয়ে ফকির মোহাম্মদকে হয়রানি করেন এসিল্যান্ড। এ অবস্থায় ফকির মোহাম্মদ আবার আদালতের শরণাপন্ন হন। এ অবস্থায় আদালত গত ৬ এপ্রিল কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিল্যান্ড ফরিদুর রহমান লিখিত জবাবও দেন। কিন্তু গত ৮ জুন আদালত তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে তাকে স্বশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার আদেশ দেন। আদেশে বলা হয়, দামুড়হুদা ভূমি কর্মকর্তা কোন আদেশের প্রেক্ষিতে নামজারি মোকদ্দমাটি স্থগিত রাখলেন তা স্পষ্টভাবে কোনো কিছু উল্লেখ করেননি। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে মনগড়াভাবে নামজারি মামলাটি স্থগিত করে বাদীকে অহেতুক হয়রানি করছেন এবং আদালতের আদেশকেও অমান্য করছেন। দেওয়ানি ৫২/১০ মামলার চূড়ান্ত ডিক্রি আজও বলবৎ রয়েছে এবং তা কোনো আদালত বাতিল করেননি। ফলে চূড়ান্ত ডিক্রি আপনিসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই মানতে বাধ্য। চূড়ান্ত ডিক্রি অবজ্ঞা করার কোনো অধিকার বা ক্ষমতা আইন আপনাকে দেয়নি। আদালত নামজারি কেসটি স্থগিত রাখার জন্য আপনাকে আদেশ দেননি। কাজেই দরখাস্তকারী ডিক্রিদারের অনুকূলে নামজারি কেসটি নিষ্পত্তি করে সংশ্লিষ্ট রেজিস্টারসহ আগামী ১১ জুলাই স্বশরীরে আদালতে হাজির হবেন। ব্যর্থতায় আপনার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আদালতের এ আদেশ পাওয়ার পর দামুড়হুদার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিল্যান্ড ফরিদুর রহমান নামজারি কেসটি নিষ্পত্তি করে গত ৯ জুন আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ বিষয়ে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম গতকাল ১১ জুন আদেশে বলেন, তার দাখিলি কাগজপত্রে দেখা যায়, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ই-সেবা ও নাগরিক সেবায় উদ্ভাবক ওরিয়েন্টেশনে অংশগ্রহণের জন্য ১০ জুন ঢাকায় যাবেন। সে কারণে জেলা প্রশাসক তাকে ৯ জুন কর্মস্থল ত্যাগের অনুমতি দিয়েছেন। বিধায়, বিষয়টি বিবেচনাপূর্বক তাকে আদালতে উপস্থিত থাকার বিষয়ে অব্যাহতি প্রদান করা হলো। তাকে এ মর্মে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক প্রদান করা হলো যে, তিনি যেন আদালতের আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকেন।

Leave a comment