ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ভুল অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যু

 

মামলায় আসামি আরএমওসহ ৩ ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিক

শৈলকুপা প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় রেজিস্ট্রেশনবিহীন আয়েশা ক্লিনিকে রাফেজা নামে এই প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতালের আরএমও রাকিব উদ্দিন রনিসহ ৩ ডাক্তার ও ক্লিনিক মালিককে আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন হাসপাতালের এনেস্থেসিয়া ডাক্তার কাওসার হামিদ, ডাক্তার আমিন মোস্তফা ও ক্লিনিক মালিক সাইদুর রহমান।
এদিকে গ্রেফতার এড়াতে তারা হাসপাতাল ছেড়েছেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুর শহরের কবিরপুর আয়েশা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্রসূতির এ ঘটনার পর নিহত রাফেজার বাবা হালিম শেখ বাদী হয়ে রাতে শৈলকুপা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত প্রসূতি রাফেজা খাতুন পৌরসভার ফাজিলপুর গ্রামের রতনের স্ত্রী।
হাসপাতালের তিনজন ডাক্তার কিভাবে সরকারি ডিউটি ফেলে রেজিস্ট্রেশন বিহীন একটি অবৈধ ক্লিনিকে সময় দেন এবং অপারেশন করছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। এসব ডাক্তারের বিরুদ্ধে হাসপাতালের সরকারি সময়েও নিয়মিত ক্লিনিকে রোগী দেখা ও সময় দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, আয়েশা প্রাইভেট হাসাপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনা নতুন নয়। হরহামেশায় এ ধরণের ঘটনা ঘটে। ক্লিনিকটিতে নিয়মিত কোন ডাক্তার নেই। ডিপ্লোমা নার্স নেই, নেই কোন প্যাথলজিস্ট ও হালনাগাদ কাগজপত্র। হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চালানো হয় চিকিৎসার নামে নার্সিং ব্যবসা। শহরের জনবহুল এলাকা কবিরপুর স্ট্যান্ডে প্রচুর শব্দ, ধুলাবালি আর ব্লিল্ডিং এর নিচে রাতদিন ওয়েল্ডিং এর ঝনঝনানি শব্দে ঘুমহীন রাত কাটে রোগীদের। নিয়ম নীতিহীন গড়ে উঠা ক্লিনিকটিতে আলো-বাতাস নেই, ছোট ছোট পায়রার ঘরের মতো কক্ষে গাদাগাদি করে দেদারছে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে চলে রমরমা এই ক্লিনিকের বাণিজ্য।
ভুল অপারেশনে অপারেশন থিয়েটারেই রোগীর মৃত্যু ও সংশ্লিষ্ট ৩ ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে শৈলকুপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডাক্তার বাবর জানান, সরকারি কাজে তিনি ঢাকা আছেন, শৈলকুপা আসার পর এসব ব্যাপারে তদন্ত করা হবে ।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমএ হাসেম খাঁন জানান, রাফেজা নামে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় ৩ ডাক্তার ক্লিনিক মালিক ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে। তবে কেউ এখনো গ্রেফতার হয়নি।