আটক পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন জামিনে মুক্ত নিখোঁজ গুম ও খুন হওয়া নেতাকর্মীদের তালিকা সংগ্রহ করছে বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজপথের আন্দোলনে অংশ নিয়ে আটক, পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন, জামিনে মুক্ত, নিখোঁজ, গুম ও খুন হওয়া নেতাকর্মীদের তালিকা সংগ্রহ করছে বিএনপি। এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতে ইতোমধ্যেই বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন স্বাক্ষরিত চিঠি প্রতিটি সাংগঠনিক জেলা, থানা, পৌরশাখা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের বরাবর ইস্যু করা হয়েছে। প্রেরিত চিঠিতে ১০ দিনের সময়ও দিয়েছে দলটির কেন্দ্রীয় দফতর। কেন্দ্রের এ ধরনের উদ্যোগে তেমন সাড়া মিলছে কি? অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছে, বিফল আন্দোলন, দলীয় কোন্দলের কারণে মাঠ পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ভর করেছে হতাশা।

একাধিক জেলা ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীর সাথে আলাপকালে তারা জানান, কেন্দ্রের এ ধরনের উদ্যোগ নতুন কিছু নয়। দল থেকে অতীতে এ ধরনের অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছিলো। অনেকবার চিঠি ইস্যু হয়েছিলো। কিন্তু কোনো উদ্যোগই কাগজ-কলমের সীমানা পেরিয়ে বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। সে কারণে এবারের উদ্যোগও সফল হবে বলে মনে করছেন না তৃণমূলরা। এ পর্যন্ত রাজপথের আন্দোলনে তৃণমূলের অবদান ছিলো সবচেয়ে বেশি। প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতে হামলা-মামলা, গ্রেফতার, গুম, খুনের শিকার হতে হয়েছে তৃণমূলদের। তাদের অভিযোগ, ইতঃপূর্বে বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশে কারাগারে আটক নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তা দিতে ‘রাজবন্দি মুক্তি পরিষদ’ গঠন করে আইনজীবীদের কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। ওই সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবরও প্রকাশিত হয়। তবে আজ পর্যন্ত রাজবন্দি মুক্তি পরিষদের কোনো কার্যক্রম তৃণমূলের চোখে পড়েনি। কাজে আসেনি এ পরিষদ। তাদের প্রশ্ন- তাহলে কেন তৈরি করা হলো এ পরিষদ? তৃণমূলের নেতাকর্মীদের নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী জমি-জমা বন্ধক রেখে, বিক্রি করে মামলা চালিয়ে যেতে হয়েছে এবং হচ্ছে। দল থেকে সহায়তা দূরে থাকুক, পরামর্শ দেয়ার লোকও পাওয়া যায় না। তৃণমূলের অনেকেরই ব্যবসা-বাণিজ্য, আয়-রোজগার বন্ধ প্রায়। গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্মমহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ দলটির নির্বাহী কমিটিতে ৪২৫ জনের অধিক কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। যাদের মধ্যে অধিকাংশই সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী ছিলেন। কেন্দ্রীয় কমিটির এ নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই কোনো মামলা হয়নি বা নেই, যেহেতু তারা সক্রিয়ভাবে অতীতের আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেননি। যারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তারাই বারবার মামলা-হামলার শিকার হয়েছেন। বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া কেন্দ্রীয় ২০ থেকে ২৫ জন নেতা পর্যায়ক্রমে জেলহাজতে গিয়েছেন।

Leave a comment