গাংনী খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা ফুল জামাত আলী প্রহৃত

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলা খাদ্যগুদাম ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফুল জামাত আলীকে গাংনী উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি হবিবুর রহমান হবি মারধর করেছেন। গতকাল সোমবার বিকেলে গুদাম অফিস প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী গাংনী খাদ্যগুদামের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হায়দার আলী জানান, গুদামে গম কেনাবেচা নিয়ে বিকেলে হবিবুর রহমান হবি ও ফুল জামাত আলীর মধ্যে ঝগড়া বাধে। এক পর্যায়ে ফুল জামাত আলীকে মারধর করে হবি ও তার সঙ্গীয় একজন। ফুল জামাত আলীকে উঁচু করে মাথার ওপর তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। হবি স্থান ত্যাগ করলে ফুল জামাত আলীকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে নেয়া হয় মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে। ফুল জামাত আলীকে মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হবিবুর রহমান হবির সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সম্প্রতি সরকারি খাদ্য সংগ্রহ কর্মসূচির আওতায় গাংনী খাদ্য গুদামে গম ক্রয় শুরু হলে গম বিক্রি ইচ্ছুক চাষিদের নাম সিরিয়ালভুক্ত করা হয়। সিরিয়ালে গম বিক্রয়ের জন্য গত দু সপ্তাহ আগে তিনি গুদাম এলাকায় গম নিয়ে আসেন। কিন্তু অর্থের বিনিময়ে প্রতিদিনই সিরিয়াল ভঙ্গ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে গম ক্রয় করছেন ফুল জামাত আলী। গতকাল সিরিয়ালের বিষয় জানতে গেলে গুদাম কর্মকর্তা ফুল জামাত আলী তাকে সাফ জানিয়ে দেয় উৎকোচ ছাড়া গম কেনা হবে না। এছাড়া প্রতি টনে এক হাজার টাকা দিলেই গম আনার জন্য সরকারি বস্তা সরবরাহ করা হবে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। মারধরের ঘটনা সঠিক নয়।

এদিকে খবর পেয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মাহমুদ হোসেন, পুলিশ সুপার হামিদুল আলম ও গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন গুদাম এলাকা পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা শুনেছেন।

গুদাম কর্তৃপক্ষ মামলা দিলে হবির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার। সিরিয়াল অনুযায়ী গম ক্রয় করতে খাদ্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।

এদিকে গতরাতে খাদ্য বিভাগের মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার কর্মকর্তাবৃন্দ মামলা দায়েরের লক্ষ্যে গাংনী থানায় আসেন। ফুল জামাতা আলীকে মারধরের ঘটনায় হবিকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত আরো একজনের নামে মামলা দায়ের করা হচ্ছে। মামলা রেকর্ড করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন।

Leave a comment