চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ ও বেগমপুর ইউনিয়নে ডাকাতি ছিনতাই আতঙ্ক : দুটি পরিবার গ্রামছাড়া

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদরের তিতুদহ ও বেগমপুর ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি দেখা দিয়েছে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বিরাজ করছে ডাকাতি, ছিনতাই, চুরি আতঙ্ক। ২ মাসের ব্যবধানে ঘটেছে বেশকিছু অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। তবে এসব ঘটনার কোনো কুল-কিনারা করতে পারেনি স্থানীয় প্রশাসন।

এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ এবং বেগমপুর ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি হয়েছে। গত ২ মাসে ইউনিয়ন দুটিতে ৫টি ডাকাতি, ২টি ছিনতাই, ৮টি চুরির ঘটনা ও সর্বশেষ গত পরশু শনিবার ঘটে একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। গত ২৪ মার্চ তিতুদহ ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামে ৪টি বাড়িতে ডাকারি ঘটনা সংঘটিত হয়। শুধু ডাকাতিই করেনি ডাকাতির পাশাপাশি একজন গৃহবধূর সম্ভ্রম নষ্ট করে। লোকলজ্জার ভয়ে এতোদিন বাইরের কারো কাছে তারা মুখ খোলেননি। তবে প্রতিবেশীদের কেউ কেউ ঘটনা জানতেন। তারাও এতোদিন বিষয়টি চেপেই ছিলেন। একই গ্রামে গত ১২ এপ্রিল ডাকাতদল দু বাড়িতে হানা দেয়। গ্রামবাসী টের পেয়ে গেলে ডাকাতদল পর পর দুটি শক্তিশালী বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে চলে যায়। সর্বশেষ গত ১৪ মে পার্শ্ববর্তী তিতুদহের ইকলাচের বাড়িতে ও ১৫ মে ডিহি কৃষ্ণপুর গ্রামের বেগমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় কলাগাছি গ্রামের মোতালেব মণ্ডলের ছেলে আব্দুর রহিম মাস্টার ও কুদ্দুসের পরিবার আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠে। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে নিরাপত্তার অভাবে বাড়ি-ঘর ভেঙে তারা পাউয়ারটিলারে করে অন্যত্রে চলে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাগাছি গ্রামের একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, এ গ্রামে ৮০টি পরিবার বসবাস করে। ভোটার সংখ্যা ২২০ জন। সন্ধ্যার পরপরই এ গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। ভয়ভীতি আর অজানা আতঙ্কে রাত কাটে প্রত্যেকের। এমন কি বাড়ির মেয়ে-ছেলে বাইরে (প্রকৃতির ডাকে) গেলে সাথে পুরুষ মানুষ যেতে হয়। ১৩ বছর আগে রহিম ও কুদ্দুস নলপাড়া গ্রাম থেকে চুরির ভয়ে এ গ্রামে এসে জমি কিনে বসবাস করছিলো। চোরের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে এখানে এসে পড়ে ডাকাতির হাতে। আশপাশ এলাকায় ডাকাতির ঘটনার খবর শুনে নিজ পরিবারে পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে শেষমেস গ্রাম ছেড়ে চলে গেলো তারা। এ বিষয়ে তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, যেখানে ঘনবসতিপূর্ণ এবং পাঁচিল দেয়া বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, সেখানে কলাগাছি গ্রামতো একটি দূর্গম গ্রাম। এলাকাবাসী অভিযোগ করে আরও বলেন, ইউনিয়ন দুটির প্রাণকেন্দ্র হিজলগাড়ি পুলিশ ক্যাম্প এলাকা। এ ক্যাম্পে একজন চৌকস পুলিশ অফিসার থাকলে অনেক ঘটনারই মুখোশ উন্মোচন হবে বলে ভুক্তোভোগী মহল মনে করছেন। কালাগাছি গ্রামের দুটি পরিবারের গ্রামছাড়ার ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি লিয়াকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা নেই।