স্টাফ রিপোর্টার: দু মাসের বেশি সময় ধরে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদের সাথে বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে গিয়ে বিএনপির নেতা আব্দুল লতিফ জনি দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো প্রায় ২ ঘণ্টা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে মেঘালয় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।
পুলিশেরই কয়েকটি অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দাদের তিনি জানিয়েছেন যে তাকে কোনো একটা জায়গায় ঘুপচি ঘরে রাখা হয়েছিল প্রায় দু মাস। তারপর বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে শিলংয়ে নিয়ে আসা হয়। গোয়েন্দাদের জেরা আর সালাহউদ্দিন আহমেদ নিজে আত্মীয়দের যা বলেছেন তার মধ্যে বেশ মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে তার দু আত্মীয় দুপুরবেলা দেখা করে খাবার আর পোশাক দিয়ে এসেছেন। তার সাথে কথাবার্তাও হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদকে উদ্ধৃত করে ওই আত্মীয়রা জানান, ৬২ দিন তিনি বন্দি অবস্থায় কাটিয়েছেন। কোথায় ছিলেন, সেটা বলতে পারেননি তিনি। তারপরে চোখ বেঁধে বেশ কয়েকবার গাড়ি বদল করে নিয়ে আসা হয় যে জায়গাটাতে, সেটা তিনি নিজেই খোঁজ করে জানতে পারেন যে শিলংয়ের গল্ফ লিঙ্ক এলাকা। পুলিশ যদিও এতোদিন দাবি করে আসছিলো তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদকে হেফাজতে নেয়। তবে সালাহউদ্দিন এদিন আত্মীয়দের জানিয়েছেন তিনি নিজেই পুলিশের কাছে গিয়েছিলেন।
আর হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, তিনি মোটের ওপর সুস্থই আছেন। তবে কিডনি আর চর্মরোগের একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে।
এদিকে টানা দু মাস পর সীমান্তের ওপারে মুক্ত সালাহ উদ্দিন আহমেদের মনোবল ফিরতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তার সাথে সাক্ষাৎ করে আসা স্বজনরা। দীর্ঘদিন আটকে রাখা ও মেঘালয়ে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়ার পর শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন বিএনপির এ যুগ্মমহাসচিব। এ কারণে তাকে প্রথমে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করেছিলো মেঘালয় পুলিশ। পুলিশের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন সালাহউদ্দিন আহমেদের সাথে কয়েকজন আত্মীয় সাক্ষাৎ করেছেন। তারা জানিয়েছেন ধীরে ধীরে তিনি মনোবল ফিরে পাচ্ছেন। তুলে নেয়ার পর থেকে তিনি কোথায় কীভাবে ছিলেন এ বিষয়েও তিনি কথা বলেছেন।
গতকাল দুপুরে চিকিৎসকের দেয়া প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমেদের আত্মীয় আয়ুব আলী বাইরে থেকে ওষুধ কিনে দিয়ে যান। তিনি জানান, হাসপাতাল থেকেই বেশিরভাগ ওষুধ দেয়া হচ্ছে। সেখানে যে ওষুধ নেই, তা বাইরে থেকে কিনে দিতে হচ্ছে।
শুক্রবার সালাহউদ্দিন আহমেদকে দেখতে আরো কয়েক আত্মীয় সেখানে গিয়েছেন। তারা তাকে থালাবাসনসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দিয়ে গেছেন। তবে তাদের কেউই গণমাধ্যমের সামনে নাম-পরিচয় প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি।