মুজিবনগরের সেই শিক্ষক সাময়িক বহিষ্কার : চুল কাটার বিচার কী?

স্টাফ রিপোর্টার: ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের এক জরুরি সভায় তাকে অভিযুক্ত করে বহিষ্কারসহ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তবে প্রকাশ্যে তার চুল কাটা ও জুতোর মালা গলায় দেয়ার ঘটনায় বিচার কী? তার সদুত্তর দিতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।

সকালে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের পূর্বনির্ধারিত জরুরি সভা শুরু হয়। সভাপতি মোস্তাকিম হক খোকন ও সদস্য সচিব প্রধান শিক্ষক কিয়ামত আলীসহ পর্ষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা ও উভয়পক্ষের শুনানি শেষে কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্যে সভা শেষ হয়। সিদ্ধান্তের মধ্যে অভিযুক্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাককে এক মাসের সাময়িক বহিষ্কার, তার পোশাকের পরিবর্তন, ভবিষ্যতে কোনো অনৈতিক কাজ করতে পারবেন না, শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষামূলক আচরণ, দোষ স্বীকার করে আবেদনপত্র ও উভয়পক্ষ মামলা মোকদ্দমা করতে পারবে না।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কিয়ামত আলী জানান, দোষ স্বীকার করে লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আব্দুর রাজ্জাক। উভয়পক্ষের সাক্ষ্য গ্রহণ করে উপরোক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এদিকে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অপরাধের অভিযোগে প্রকাশ্য দিবালোকে আব্দুর রাজ্জাকের মাথার চুল কাটা ও গলায় জুতোর মালা পরানোর বিচার কী হবে? এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। জনরোষে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি ঘটেছে এবং এরজন্য বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়ী নয় বলে দাবি করেছেন প্রধান শিক্ষক।

বুধবারের ওই ঘটনার পর থেকেই শিক্ষকের উত্তম শিক্ষা হয়েছে বলে এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন। অন্যদিকে পাল্টা সমালোচনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। শ্লীলতাহানির অভিযোগে যদি শিক্ষকের মাথার চুল কাটা ও গলাল জুতোর মালা ঝুলানো যায় তাহলে আবার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিচার কিসের? এমন প্রশ্ন এলাকার অনেকের। আব্দুর রাজ্জাককে যেহেতু বিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী শাস্তি দেয়া হচ্ছে তাই যারা চুল কাটা ও জুতোর মালা দেয়ার সাথে জড়িত তাদের কেন বিচার হবে না? এমন প্রশ্ন আব্দুর রাজ্জাকের পরিবার স্বজন ও এলাকার অনেকের।

উল্লেখ্য, বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে বুধবার আব্দুর রাজ্জাক বিদ্যালয় থেকে ধরে গণপিটুনি দেয় স্থানীয় লোকজন। তাকে দারিয়াপুর বাজারে প্রকাশ্যে মাথার চুল কেটে গলায় জুতোর মালা ঝুলিয়ে দেয়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।