কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রী হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চলানোর অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ায় কলেজছাত্রী হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে নিহতের পরিবার।

রিতার পরিবারিক সূত্র জানিয়েছে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ইবি থানার বলরামপুর গ্রামের রেজাউল হোসেনের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে লিজা আক্তার রিতার সাথে ইবি থানার ঝাউদিয়া গ্রামের মানছুদ্দিন বুড়োর ছেলে আশরাফুল ইসলামের বিয়ে হয় পারিবারিক সম্মতিতে। বিয়ের পরপরই যৌতুক লোভী আশরাফুল রিতাকে অমানবিক নির্যাতন চালাতো। ঘটনার দিন গত ২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি সকালে আশরাফুল রিতাকে পিতার বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা আনতে বলে। রিতা টাকা আনতে অস্বীকার করলে তাকে শ্বশুর-শ্বাশুড়ি ও স্বামী আশরাফুল চরম শারীরিক নির্যাতন চালায়। রাতে আশরাফুল স্ত্রী রিতাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে নিজ ঘরে ওড়না দিয়ে লাশ ঝুলিয়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় নিহত রিতার ভাই বাদী রিপন বোনের বিচারের আশায় থানায় মামলা দিতে গেলে ব্যর্থ হন। মামলা না করার জন্য এর মধ্যে অভিযোগ উঠেছে ঘাতকের লোকজন নানাভাবে হুমকি ও প্রলোভন দিতে থাকে রিতার পরিবারকে। সব বাধা ও লোভ উপেক্ষা করে ২০১৪ সালের ২১ জানুয়ারি আদালতে মামলা করেন রিপন। আদালত ইবি থানাকে মামলা গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। সে সময় ইবি থানার এসআই শরিফুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করেন। কিন্তু আদালত সেটা বিশ্বাস না করে মামলার অপরাধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। তাই আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশের তদন্ত করতে আদেশ প্রদান করেন। বর্তমানে কুষ্টিয়া সিআইডির তদন্তকারী অফিসার আকিদুল ইসলাম তদন্তকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ময়নাদতন্ত রিপোর্ট হাতে পেলেই ঘটনা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

নিহত রিতার বাবা রেজাউল হোসেন জানান, তার মেয়ে মারা যাওয়ার সংবাদ শুনে ঝাউদিয়ায় গেলে মেয়ের লাশ দাফন করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং জামাইকে দেয়া নগদ ২০ হাজার টাকা এবং ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা সব মিলিয়ে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকায় মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু তার একটি মাত্র মেয়ে। মারা গেছে টাকা চাই না, চাই শাস্তি। এরই মধ্যে ঘাতক আশরাফুল হরিণাকুণ্ডুর ময়েনখালী গ্রামের মাসুদা খাতুনকে বিয়ে করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঘটনার সরেজমিনে গেলে সাংবাদিক দেখেই আশরাফুল ও তার বাড়ির লোকজন পালিয়ে যায়। অসহায় পরিবারের দাবি, হত্যাকারীদের অর্থের দাপটে যেন রিতার মৃত্যু ধামাচাপা না পড়ে। দোষীদের গ্রেফতার করে আইনে আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন রিতার পরিবার।

Leave a comment