থাইল্যান্ডের বন থেকে উদ্ধার হওয়া শতাধিক মৃতপ্রায় বাংলাদেশির মধ্যে আলমডাঙ্গার এক ব্যক্তি জীবিত উদ্ধার

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: থাইল্যান্ডের বন থেকে উদ্ধার হওয়া শতাধিক মৃতপ্রায় বাংলাদেশির মধ্যে আলমডাঙ্গার বন্ডবিলের একজনের জীবিত থাকার কথা জানা গেলেও তার পরিচয় সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি। স্বজনদের কোনো প্রকার সংবাদ না পেয়ে বন্ডবিলের ৬ পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

জানা গেছে, একটি বিশ্বস্ত সূত্রে আলমডাঙ্গার এক যুবকের উদ্ধারের তথ্য জানা গেলেও সূত্রটি তার নাম পরিচয় বলতে পারেনি। উদ্ধারকৃতরা এতোটাই অসুস্থ যে অনেকেরই মুখ দিয়ে কোনো শব্দ বের হচ্ছে না। এদিকে উদ্ধার হওয়া বন্ডবিল গ্রামের অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় না জানা গেলেও গ্রামের ৬টি পরিবারে চলছে শোকের মাতম। পানিপথে মালয়েশিয়া গমনকারী বন্ডবিল গ্রামের ৬ ব্যক্তির কোনো সংবাদ না পেয়ে এমনিতেই তাদের পরিবার ছিলো উৎকণ্ঠিত। থাইল্যান্ডের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় শতাধিক মৃতপ্রায় ব্যক্তির মধ্যে বন্ডবিলের একজন জীবিত আছে এ সংবাদ জানলেও ৬ জনে মধ্যে কে জীবিত আছে তা কেউ জানতে পারেনি। গতকাল বন্ডবিল গ্রামে গিয়ে জানা যায়- নূর আলীর ছেলে মিনহাজ আলী, মৃত শুকুর মণ্ডলের ঘরজামাই ফারুক হোসেন, ফজলুর ছেলে আনারুল, জুলমতের ছেলে আজম, নিয়ামত আলীর ছেলে হাসান ও ওহাব আলীর ছেলে সেন্টু। এ ৬ জনের মধ্যে ৫ জনই ভূমিহীন হতদরিদ্র। প্রায় সোয়া ১ মাস পূর্বে তারা কোনো প্রকার পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই বাড়ির কাউকে না বলে দালালের খপ্পড়ে পড়ে পানিপথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমায়। বাড়ি থেকে যাওয়ার পর তাদের কোনো সংবাদ পায়নি পরিবার পরিজন।

গ্রামের অনেকে জানিয়েছেন, তাদের কোনো সংবাদ না দিতে পারলেও দালালেরা প্রায় টাকার জন্য এদের বাড়িতে তাগাদা দিতো। পরে থাইল্যান্ডের বনে গণকবর আবিস্কার ও শ শ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধারের সংবাদ জানতে পারার পর দালালরা আর টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছে না। এ ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর লোকজনের নিকট দালালের পরিচয় জানতে চাইলেও তারা জানাননি। শুধু মোবাইলফোনে দালালের সাথে তাদের কথা হওয়ার দাবি করেন। তবে দালালের মোবাইলফোন নম্বর দিতে রাজি হননি তারা। দালালের পরিচয় দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে বিপদে থাকা তাদের প্রিয়জনদের কোনো ক্ষতি হতে পারে এ আশঙ্কায় দালালের পরিচয় গোপন করেছেন তারা। তবে বণ্ডবিল গ্রামের ওহাব আলী জানিয়েছেন, ভাংবাড়িয়া গ্রামের আবিছদ্দীন মহুরির ছেলে লিটন দালাল তার ছেলেকে পানিপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গেছে। সোয়া এক মাসেও তিনি ছেলের সংবাদ জানতে পারেননি। ছেলের সংবাদ জানতে তিনি লিটনের বাড়ি গিয়েছিলেন কয়েক দিন পূর্বে। লিটন তাকে জানিয়েছে, তাদের গ্রামের ৮ জনসহ বন্ডবিলের ৬ জনই জেলে রয়েছে। তাদের মূল দালালকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে তাদেরকে জেল থেকে ছাড়াতে।

গ্রামসূত্রে জানা গেছে, লিটনের মত একই এলাকার কয়েকজন ও পার্শ্ববর্তী গাংনী উপজেলার হেমায়েতপুরের একজন চিহ্নিত দালাল পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই পানিপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে পাচারচক্রের নিকট বিক্রি করে ব্যবসা করছে।