বাসের ড্রাইভার-হেলপারকে মারধোর প্রতিবাদে ইবিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভাড়া করা বেসরকারি একটি বাসের ড্রাইভার-হেলপারকে এক ছাত্রলীগকর্মী পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন ডায়না চত্বরের নিকট এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ঘটনায় আহতরা হলেন- বাসের ড্রাইভার হবিবার ও হেলপার মেহেদী। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে গাড়ি সরববরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়াকরা গাড়ি রাজধানী (ঢাকা-মেট্রো-০২-০৫৩৯) কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বাসে একটি যাত্রী উঠানোকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ ছাত্রলীগকর্মী সজলের সাথে বাসের ড্রাইভার হবিবার রহমান ও হেলপার মেহেদীর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বাসটি দেড়টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছুলে কথা কাটাকাটির জের ধরে সজল বাস থেকে নেমে বাসের ড্রাইভার ও হেলপারকে বেধড়ক মারধর করে। বাসের হেলপার মেহেদী ডান চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। আহত বাসহেলপার মো. মেহেদী বলেন, কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে বাসে এক যাত্রীকে উঠানোকে কেন্দ্র করে এক ছাত্র আমাকে ও বাসের ড্রাইভারকে চড়-থাপ্পর, কিল-ঘুষি মারে। তবে ওই ছাত্রকে আমি চিনি না। জানা গেছে, মারধরকারী ছাত্রলীগ কর্মীর নাম সজল। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান গ্রুপের কর্মী।

ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান বলেন, একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে। পরে ও আমার কাছে ভুল স্বীকার করেছে। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, মারধরের বিষয়টি আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে ওই ছেলে ছাত্রলীগ করে কি-না তা আমার জানা নেই।

এদিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বাস সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্যাম্পাসে বাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। মারধরের ঘটনার পর কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ শহর থেকে বিকেলের জন্য নির্ধারিত কোনো গাড়ি ক্যাম্পাসের উদ্দেশে গাড়ি যায়নি। কুষ্টিয়া শহর থেকে ক্যাম্পাসে বাস সরবরাহকারী হাসানুজ্জামান বাচ্চু বলেন, কিছু দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বাসের ড্রাইভার-হেলপারকে মারধর করেছে। ওই ঘটনার বিচার আগামী শনিবার হওয়ার কথা ছিলো। আজকে (বৃহস্পতিবার) ছাত্রলীগকর্মীরা আবার বাসের ড্রাইভার-হেলপারকে মেরেছে। তাই আমরা সাফ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বলে দিয়েছি, যতোক্ষণ না এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার হবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গাড়ি চলবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, একটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে গেছে। আমরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।