মেহেরপুরের ঝাঁঝা গ্রামের মায়ের পরকীয়া : পথের কাঁটা সরাতে শিশু সন্তানকে জবাই করে খুন মামলা
মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের ঝাঁঝা গ্রামের শিশু জারজিনা (৬) হত্যার দায়ে জাহাঙ্গীর নামের এক যুবকের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক টিএম মুসা এক জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। মামলার অপর দু আসামি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জাহাঙ্গীর হোসেন (২২) মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা ইউনিয়নের ঝাঁঝা গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে। মায়ের পরকীয়া সম্পর্কের জেরে ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি ভরদুপুরে গ্রামের পাশের একটি সরিষা ক্ষেতে জারজিনাকে জবাই করে খুন করে জাহাঙ্গীর।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বাদীসহ মোট ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। অভিযোগ সন্দেহতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত প্রধান আসামি জাহাঙ্গীরকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর দু আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় বাদী ও তার পক্ষের কেউ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
মামলার বিবরণে জানা যায়, শিশু জারজিনা হত্যাকাণ্ডের দিনই নিহতের দাদি তানজিলা খাতুন বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করেন। শিশু জারজিনার মায়ের পরকীয়া প্রেমিক একই গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান আসামি ও তার সহযোগী আমিরুল ইসলাম ও সাদেক আলীকে আসামি করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পরদিন জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে সদর থানা পুলিশ। পরকীয়া প্রেমিকা চিন্তামনিকে পেতে পথের কাঁটা সরাতে শিশু জারজিনাকে জবাই করে খুন করা হয়। আমিরুল ইসলামের কথামতো ওই হত্যা করা হয়েছে মর্মে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আসামি জাহাঙ্গীর। মেহেরপুর সদর থানার তৎকালীন এসআই জিহাদ মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন (চার্জশিট) প্রদান করেন। এতে তিন আসামিকেই অভিযুক্ত করা হয়।
বিজ্ঞ আদালতের দেয়া রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কাজী শহিদুল হক জানান, সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিজ্ঞ বিচারককে ধন্যবাদ। এ রায়ের মধ্যদিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বয়স কম হওয়ার কারণে উচ্চাদালতে আপিল করার কথা বলেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খন্দকার একরামুল হক হিরা।