লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দের সরেজমিন পরিদর্শন : মামলার প্রস্তুতি

চুয়াডাঙ্গার তিতুদহ তেঘরি গ্রামে ৪ সন্তানের জননীর সাথে স্কুলশিক্ষকের পরকীয়া এবং সালিস

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার তেঘরি গ্রামে সালিসের জরিমানার টাকা ভুড়িভোজের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার জেলা লোকমোর্চার একটি দল সরেজমিন পরিদর্শন করেছে। ৬ সদস্যের দলটি স্থানীয়দের সাথে কথা বলে সালিসের টাকা ভাগাভাগির তথ্য পেয়েছে। জেলা লোকমোর্চ নেতৃবৃন্দ এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, বিয়ের প্রলোভনে ৪ বছর ধরে ৪ সন্তানের জননীর দেহভোগের অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আজ বুধবার মামলা হতে পারে।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের তেঘরি মাঝেরপাড়ার ৪ সন্তানের জননী লতিফা বিয়ের দাবি নিয়ে ২৩ এপ্রিল প্রতিবেশী স্কুলশিক্ষক ইলিয়াসের বাড়িতে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, ইলিয়াসের ডাকেই লতিফা তার বাড়িতে গেলে প্রতিবেশীরা আটক করে। এ সময় লতিফা স্কুলশিক্ষক ইলিয়াসের সাথে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়ার কথা স্বীকার করে বলে, বিয়ের প্রলোভনে দেহভোগ করে আসছে স্কুলশিক্ষক। এরই প্রেক্ষিতে ২৫ এপ্রিল সালিসের আয়োজন করা হয়। লতিফার বাড়িতেই সালিসে স্কুলশিক্ষক ইলিয়াসকে ২৫ হাজার টাকা জরিমান করা হয়। অবশ্য সালিসের আগেই দুজন তিন হাজার টাকা নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেবে বলে জানায়। সে চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে সালিসে জরিমানার টাকা হাতে নেয় লতিফার স্বামী আশরাফুল। লতিফার স্বামী টাকা গ্রহণ করলেও সালিসেই টাকাগুলো তুলে দেন ইউপি মেম্বার জাকির হোসেনের হাতে। পরদিন আশরাফুলের নিকট মেম্বার সাড়ে ২৩ হাজার টাকা দেয়। সে টাকা গ্রহণ করলেও তা আশরাফুলের কাছে থাকেনি। আশরাফুল এ তথ্য দিয়ে লোকমোর্চর প্রতিনিধিদলকে বলেছেন, ‘গ্রামেরই একটি দোকানে বসে মেম্বার আমার হাতে সাড়ে ২৩ হাজার টাকা দেয়ার সময়ই মেম্বার বলেন, দেড় হাজার টাকা তিতুদহ পুলিশ ফাঁড়ির টুআইসি এএসআই ফারুক হোসেনকে দিতে হয়েছে। দোকানে বসে মেম্বারের উপস্থিতিতেই মোফাজ্জল হোসেন মোফাকে ৫ হাজার টাকা ও আমির হোসেনের হাতে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়। এরা ক্ষমতাসীন দলের লোক। সাড়ে ৮ হাজার টাকা আমার কাছে (আশরাফুলের কাছে) থাকে। বিষয়টি গোপন রাখার জন্য চাপও দেয়া হয়।’

এরই এক পর্যায়ে সালিসের টাকা ভুড়িভোজ বলে অভিযোগ তুলে পত্রিকায় ২৯ এপ্রিল প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। গতকাল চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার একটি তদন্ত টিম তেঘরি গ্রামের সরেজমিনে যান। তাদের তদন্তে বেরিয়ে আসে টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি। সরেজমিন পরিদর্শনকালে ঘটনার বর্ণনা শুনে জেলা লোকমোর্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করা হবে। লতিফা বেগম ঘটনার পর থেকেই তার পিতার বাড়ি অবস্থান নিয়েছেন। তার স্বামী বাদী হয়ে মামলা করবেন, লোকমোর্চ দেবে আইনি সহায়তা।

সরেজমিন পরিদর্শন দলে ছিলেন জেলা লোকমার্চার সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক এমএম শাহজাহান মুকুল, নির্বাহী সদস্য সাবেক সেক্রেটারি সাংবাদিক শাহ আলম সনি, দিলরুবা খানম, সদর উপজেলা লোকমোর্চার সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস। অভিযুক্ত শিক্ষক ইলিয়াস হোসেনের সাথে জেলা লোকমোর্চার সদস্যরা মোবাইলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি গ্রামের নেই বাইরে আছি। আজ দেখা করতে পারবো না। আগামীকাল দেখা করবো।

Leave a comment