মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরে কোনোভাবেই কমছে না ডাইরিয়ার প্রকোপ। গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত শহরের চক্রপাড়া ও স্টেডিয়ামপাড়ার ডায়রিয়া আক্রান্ত ৩০ জন মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন অর্ধশতাধিক রোগী। এছাড়ও গত দু সপ্তায় ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন প্রায় সাড়ে ৭শ রোগী। পরিস্থিতি মোকাবেলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুটি মেডিকেল টিম গঠনের পাশাপাশি পানি পরীক্ষার জন্য পৌরসভাকে অবহিত করেছে।
গত কয়েক দিনের ডায়রিয়া পরিস্থিতি নিয়ে অনেকটাই উদ্বিগ্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন চিকিৎসক-নার্সরা। এর মধ্যে শহরের চক্রপাড়া ও স্টেডিয়ামপাড়া থেকে নতুন রোগী আসায় নতুন সঙ্কট দেখা দেয়। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড পরিদর্শন করে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী মেডিকেল টিম গঠনের নির্দেশ দেন। সেমতে, হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অলোক কুমার দাসের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি এবং সিভিল সার্জন অফিসের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার রওশন নাহারকে প্রধান করে ৫ সদস্যের আরেকটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল টিমকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে রোগীর বৃদ্ধির সাথে সাথে ওষুধের তীব্র সঙ্কট রয়েই গেছে। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ধারে ওষুধ নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তাও আগামী দু-তিন দিনের মধ্যে শেষ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নির্দিষ্ট দুটি পাড়ার বেশি সংখ্যক মানুষ একই সাথে ডায়রিয়া আক্রান্ত হওয়ায় পানি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন চিকিৎসকরা। পানিবাহিত কারণে ডাইরিয়া হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে মেহেরপুর পৌর মেয়র মোতাছিম বিল্লাহ মতুকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের একশ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিনশ রোগী ভর্তি হয়। আর গত দু সপ্তায় সাড়ে সাতশ রোগী ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। ফলে সরকারি বরাদ্দের ওষুধ জুনের ৩০ তারিখের আগেই ফুরিয়ে গেছে। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের নির্ধারিত ১০ শয্যার বিপরীতে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ জন। ফলে ওয়ার্ড ছাপিয়ে সিঁড়িকক্ষ, বারান্দাসহ মেঝেতে বেড পেতে রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডায়রিয়ার বিষয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী। ডাইরিয়া থেকে বাঁচতে বাসি ও দোকানের খাবার না খাওয়ার পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি পান করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।