চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে আলমডাঙ্গা ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত চেইনম্যান আলমগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ

কয়েকজনের নিকট থেকে ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গা উপজেলা ভূমি অফিসের অবসরপ্রাপ্ত চেইনম্যান আলমগীর শেখের বিরুদ্ধে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কতিপয় ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অবসরভাতা উত্তোলন করে কয়েকজনকে টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সে প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করেননি। ইতোমধ্যেই তিনি তার প্রাপ্য টাকা তুলে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা।

জানা গেছে, মৃত খোদাবক্সের ছেলে বর্তমানে কুষ্টিয়ার হাউজিং এ ব্লকে বসবাসকারী আলমগীর শেখ আলমডাঙ্গা উপজেলা ভূমি অফিসের চেইনম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। সে সুবাদে তিনি আলমডাঙ্গা এলাকায় বেশ পরিচিত। আলমগীর শেখের ভাই সেনা অফিসার। তার মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে প্রায় ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি একই অফিসে কর্মরত আলমগীর শেখের সহকর্মী তরিকুল ইসলামের ভাইকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার নিকট থেকেও ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে আলমডাঙ্গার গোবিন্দপুরের মুকুলের নিকট থেকে আড়াই লাখ, কলেজপাড়ার আব্দুল মান্নাফের ছেলে পান্নার নিকট থেকে ৩ লাখ, কুমারী গ্রামের আজগর আলীর ছেলে রুনুর নিকট থেকে ২ লাখসহ বেশ কয়েকজনের নিকট থেকে প্রায় ১১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। টাকা নিয়ে বছরের পর বছর পার হলেও তাদের কারও চাকরি না হলে টাকা ফেরত চায় লগ্নিকারীরা। এদের মধ্যে পান্না, রুনুসহ বেশ কয়েকজন আলমগীর শেখের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তুরে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। অফিসের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে সালিসে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আলমগীর শেখ যে, সহকর্মী তরিকুলের টাকা তিনি অবসরভাতার টাকা উত্তোলন করে ফেরত দেবেন। একই প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি মুকুল, রুনুসহ অনেককেই দিয়েছিলেন। এমনকি সে সময় তিনি পাওনাদারদের অগ্রিম ব্যাংক চেকও প্রদান করেছেন। প্রায় ১ বছর আগে তিনি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন। ইতোমধ্যে অবসরভাতা উত্তোলনের সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিলেন। পাওনাদাররা সব সময় খোঁজ রাখছিলেন যে কবে আলমগীর শেখ অবসর ভাতা উত্তোলন করবেন। অভিযোগকারীরা জানিয়েছেন- গত ৩০ এপ্রিল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তার অবসরভাতার ফাইল ছাড় দেয়া হয়েছে। গত ৩ মে পর্যন্ত সরকারি ছুটি ছিলো। গত ৪ মে একদিনেই তিনি আলমডাঙ্গা উপজেলা অ্যাকাউন্ট অফিস থেকে তিনি তড়িঘড়ি করে সংগোপনে অবসর ভাতা তুলে নিয়ে আলমগীর শেখ লাপাত্তা হয়েছেন। অবসরভাতা উত্তোলন করে লাপাত্তা হওয়ার সংবাদ পেয়ে পাওনাদারদের মাথায় বাজ পড়েছে। তারা খোঁজ করেও আলমগীর শেখের কোনো সন্ধান পাচ্ছেন না।

পাওনাদারদের অনেকে অভিযোগ করে বলেছেন, উপজেলা অ্যাকাউন্ট অফিসে অবসরভাতা উত্তোলনের জন্য অনেকেই মাসের পর মাস ঘুরছেন। ভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না। অথচ উপজেলা অ্যাকাউন্ট অফিসার জেডএম দেদার হঠাত করেই এতোটা দয়ালু হয়ে উঠলেন যে সকল কাজ ফেলে রেখে তিনি মাত্র ১ দিনেই আলমগীর শেখের অবসরভাতা দিয়ে দিলেন। তারা অভিযোগ করেছেন উপজেলা অ্যাকাউন্ট অফিসারের যোগসাজশে ভূমি অফিসকে কোনো তথ্য প্রেরণ না করেই তড়িঘড়ি করে এ অবসরভাতার টাকা ছাড় দেয়া হয়েছে।

Leave a comment