সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ভারতে তোলপাড় নীরব পর্যবেক্ষণের নীতি গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার: সীমান্ত চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে ভারতের রাজনীতিতে রীতিমতো তোলপাড় চলছে। কিন্তু সেই প্রশ্নে বাংলাদেশ এখনও নীরব। সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না দেখানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পররাষ্ট্র দপ্তরও সতর্কতার সাথে নীরবে দিল্লি পরিস্থিতির ওপর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাওয়ার নীতি নিয়েছে।

সূত্র মতে, ঢাকা অপেক্ষায় রয়েছে দিল্লির তরফে চুক্তিটি নিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়ার। সেটি পাওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান জানানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা এখনই এ নিয়ে কিছু বলছি না। যখন সময় হবে তখন সংবাদ সম্মেলন করেই সব বলা হবে। সীমান্ত চুক্তি নিয়ে ঢাকার সাথে কথা হয়েছে বলে মোদি সরকারের মন্ত্রিসভাকে অবহিত করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। বাংলাদেশ সরকারের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। ভারতীয় মন্ত্রীর ওই বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি। দ্য হিন্দুসহ দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে এখনও কিছুই জানানো হয়নি। ভারতের অবস্থান জানানো হলে বিষয়টি বিশ্লেষণ করে দেখা হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এখনও আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানি না। আমরা জানতে পারলে আমাদের মত জানাতে পারবো। ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত স্থল সীমান্ত চুক্তি এবং ২০১১ সালে সই হওয়া এ সংক্রান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নে ভারতের রাজ্যসভায় বিল আসছে চলতি অধিবেশনে। ৫ মে’র পরে যেকোনো দিন বিলটি সংসদে তোলার ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি সরকার। কিন্তু গত মাসের মাঝামাঝিতে চুক্তি থেকে আসামকে বাদ দেয়ার খবর প্রকাশিত হয়। সেই সাথে তিস্তার মতো সীমান্ত চুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার খবরও আসতে থাকে। হঠাৎ নেতিবাচক ওই খবরে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন ঢাকার কর্মকর্তারা। খবরে প্রকাশ, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও আসন্ন নির্বাচনে সুবিধা পাওয়ার জন্য আসামকে বাদ দিয়েই চুক্তিটির বাস্তবায়ন চায় ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্ব। এ নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা এবং মোটামুটি ঐকমত্যেও পৌঁছেছে শাসক জোট।

ভারতের এক তরফা ওই চিন্তার বিষয়ে আগ বাড়িয়ে কোন মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া না দেখানার নীতি গ্রহণ করে বাংলাদেশের নেতৃত্ব। সরকার বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তো বটেই রাজনীতিকরাও যেন এ নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া না দেখান সেটি নিশ্চিত করার তাগিদ দেয়া হয়। সেটি এখনও বহাল রাখার চেষ্টা করছেন নীতিনির্ধারকরা। পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, তিস্তায় অনিশ্চয়তা থাকলেও সীমান্ত চুক্তি নিয়ে বরাবরই আশাবাদী ছিলো বাংলাদেশ। সম্প্রতি সময়ে সরকারের যেসব মন্ত্রী, উপদেষ্টা, এমপি এবং পদস্থ কর্মকর্তা ভারত সফর করেছেন, দেশে ফিরে সবাই আশার কথা শুনিয়েছেন। সফরকালে তারা দেশটির সরকারি দল, জোট ও বিরোধী নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে এ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব জানতে পেয়েছিলেন। আচমকা কেন এ পরিবর্তন? বিজেপি বা কেন নেতিবাচক অবস্থান গ্রহণ করতে যাচ্ছে? সেটি জানার চেষ্টায় পর্যবেক্ষণ জোরদার করেছেন ঢাকার কর্তারা।