মুন্সিগঞ্জে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুতকেন্দ্র উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: গতকাল রোববার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সিগঞ্জে প্রথমবারের মতো বিদ্যুতকেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ ভিডিও কনফারেন্স করেন।
এ সময় মুন্সিগঞ্জ সভাকক্ষে জেলা পরিষদ প্রশাসক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর আলহাজ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, সাবেক হুইপ সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি এমপি, অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস এমপি, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) লোকমান হোসেন মিয়া, বিদ্যুত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হুমায়ুন কবির, জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল, পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী সওদাগর মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মো. শহিদুল ইসলাম, অধ্যাপক সুখেন চন্দ্র ব্যানার্জী, উপজেলা চেয়ারম্যান ওসমান গনি তালুকদার, বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুর রহমান খান, এডিসি ফজলে আজিম, ইউএনও সারাবান তাহুরা, দৈনিক মুন্সিগঞ্জ কাগজের সম্পাদক মোহাম্মদ আরফিন, প্রেসক্লাব সভাপতি মীর নারিউদ্দিন উজ্জ্বল, সহসভাপতি রাসেল মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসানসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রথমে মৃনাল কান্তি দাস বক্তব্য রাখার পর প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন আলহাজ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। মুন্সিগঞ্জে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং গজারিয়ায় গ্যাস সুবিধা, ফুলদী নদীতে সেতু নিমার্ণ, চরকিশোরগঞ্জ-গজারিয়া ফেরি সার্ভিস, মেডিকেল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ মুন্সিগঞ্জের বিভিন্ন উন্নয়নের বিষয় গুরুত্বপায় এ ভিডিও কনফারেন্সে।
এ উদ্বোধনের মাধ্যমে সদর উপজেলার মিরকাদিমের কাঠপট্টিতে সিনহা পিপলস এনার্জি লিমিটেডের কাঠপট্টি বিদ্যুত কেন্দ্রনামের ৫২ মেগাওয়ার্ডের এ বিদ্যুত কেন্দ্রটি চালু হলো। ফার্নেসওয়েলে ভিত্তিক এ বিদ্যুত কেন্দ্রটি মিরকাদিম গ্রিড হয়ে সরাসরি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৫২ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদদিত হলেও পরবর্তী এটি ১০৪ মেগাওয়াটে উন্নীত হবে।
উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের পূর্বশর্ত হলো বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ ছাড়া শিল্পকলকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব না। সভ্যতার বিকাশে বিদ্যুত অপরিহার্য। আমরা যখন প্রথম ক্ষমতা নিই তখন দেশে বিদ্যুতের জন্য হাহাকার ছিল। আমরা সেই অবস্থা থেকে বিদ্যুত খাতে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বিদ্যুৎ ব্যবহারে জনগণকে মিতব্যায়ী হতে আহবান জানান। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিনত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী মুন্সিগঞ্জের কাঠপট্টি বিদ্যুতকেন্দ্র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের গোগনগর ও নাটোর ফার্নেস ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র এবং ঘোড়াশালে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ৩১৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার মোট চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এবং মেঘনাঘাট থেকে আমিন বাজার ৪শত কেভি সঞ্চালন বিদ্যুত লাইন ও ঢাকার লালবাগ ১৩২/৩৩/১১ কেভি বিদ্যুত উপকেন্দ্র একযোগে উদ্বোধন করেন। প্রতিটি জেলার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই এই উদ্বোধন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এই সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উদ্বোধনও হলো ডিজিটাল প্রক্রিয়ায়। সরকার দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করছে।
এতে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়ে এখন ক্যাপটিভসহ ১৩ হাজার ২৬৫ মেগাওয়াট স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা হয়েছে। দেশে গ্রীষ্মকালীন বিদ্যুতের চাহিদা ৮ হাজার মেগাওয়াট। গত ১৫ এপ্রিল ৭ হাজার ৫শত ৭১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ হয়েছে। এই ৩১৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ায় আর কোন লোডশেডিং থাকছে না দেশে।