মহেশপুরে চাঁদার দাবিতে ঠিকাদারকে কুপিয়ে জখম

স্টাফ রিপোর্টার: নির্মাণ কাজে দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঠিকাদারের আঙুল কেটে দিয়েছে সন্ত্রাসী ওমর ফারুক ও তার দলবল। এ বিষয়ে মামলা করায় কাজটিও বন্ধ করে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২৬ এপ্রিল ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মাইলবাড়িয়া গ্রামে। বর্তমানে আহত ঠিকাদার আশরাফুজ্জামান ওরফে কালাম যশোরে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঠিকাদার আশরাফুজ্জামান জানান, তারা কয়েক বন্ধু মিলে মহেশপুর এলাকায় ঠিকাদারি কাজ করছেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা প্রকল্প অফিস মাইলবাড়িয়া গ্রামে একটি কালভার্ট নির্মাণের দরপত্র আহবান করলে এতে তারা অংশ নিয়ে কাজটি পান। ১০ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় মহেশপুরের মাইলবাড়িয়া গ্রামে এই কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, কালভার্টটির কাজ চলাকালে মাইলবাড়িয়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে ওমর ফারুকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। তারা এই টাকা দিতে রাজি না হলে কাজ বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়। এরপর পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা ১০ হাজার টাকা দিয়ে কাজটি চলমান রাখেন। কাজের ঢালাই চলাকালে তারা আবারো ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু দাবিকৃত এই টাকা না দেয়ায় সন্ত্রাসী ফারুক রামদা দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। তিনি হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে বাম হাতের একটি আঙ্গুল কেটে পড়ে যায়। সন্ত্রাসীরা এ সময় তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বীরদর্পে চলে যায়। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মহেশপুর উপজেলা হাসপাতাল এবং পরে যশোরের আহাম্মদ আলী রোটারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আদালতে সন্ত্রাসী ওমর ফারুককে প্রধান করে ৯ জনের নাম উলে¬খ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহন করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে মহেশপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা জানান, চাঁদাবাজরা তাকেও লাঞ্চিত করেছে। তিনি জানান, ঠিকাদার অফিসের তত্বাবধানে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই কাজে বাধা দেয় কিছু সন্ত্রাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান, ওমর ফারুক নিজেকে সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজের এপিএস দাবি করে। এ কারণে তারা ফারুকের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে সাহস পাননা। মহেশপুর থানা পুলিশের ওসি শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, ঘটনাটি তারা শুনেছেন। তবে এখনও কেউ তাদের কাছে কোনো অভিযোগ নিয়ে আসেননি। সংসদ সদস্য নবী নেওয়াজ জানান, ওমর ফারুক তার এপিএস নন। সে ছাত্রলীগ করার সুবাদে তার বাসায় যাতায়াত করে। তবে এ ঘটনার পর তিনি সেটা বন্ধ করে দিয়েছেন।

Leave a comment