স্টাফ রিপোর্টার: যশোরে শাহিন বিশ্বাস নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে কুপিয়ে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার দক্ষিণ নূরপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত শাহিন ওই গ্রামের মিলন বিশ্বাসের ছেলে।
এদিকে এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। এরা হলো একই গ্রামের আসলামের ছেলে মাহিন হোসেন মুহিন, মৃত ছদেম মোল্লার ছেলে নান্নু মোল্লা ও নূর ইসলামের ছেলে আশরাফুল।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে শাহিন বাড়ির সামনে অবস্থিত নিজস্ব দোকানে বসেছিলো। এসময় দুর্বৃত্তরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। স্থানীয়রা মূমুর্ষূ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ১০টার দিকে মারা যায় শাহিন।
এদিকে গতকাল দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। নিহতের পিতা মিরান বিশ্বাস জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি অফিসে যাওয়ার পথে ছেলেকে দোকানে দেখে যান। পরীক্ষা থাকায় ছেলেকে তাড়াতাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়তে বসতে বলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফোনে খবর পান তার ছেলেকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শাহিনের কোনো শত্রু ছিলো না। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কেউ কোনো অভিযোগও করতে পারবে না। অথচ তাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আব্দুল কাইয়ুম নামে এক ব্যক্তির সাথে মিলে তিনি জমি কিনেছিলেন। ওই জমিতে প্রবেশের রাস্তা নির্মাণ নিয়ে তার সাথে কাইয়ুমের দীর্ঘদিন ধরে গোলযোগ চলে আসছে। এ নিয়ে আদালতে মামলাও বিচারধীন রয়েছে। এর জের ধরেই আব্দুল কাইয়ুম তার ছেলেকে খুন করিয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
এদিকে যশোর কোতোয়ালী থানার ওসি শিকদার আককাছ আলী জানান, একটি বলাৎকারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। শাহীন যাকে বলাৎকার করেছিলো তার ভাইয়েরা পরিকল্পনা করে তাকে খুন করেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
তিনি আরো জানান, ঘটনার পরপর শাহিনের পরিবারের পক্ষ থেকে ৯ জনকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সেটা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। অপরদিকে শাহিনের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে যান যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন। এ সময় তিনি নিহতের স্বজনদের সান্ত্বনা দেন। তিনি শাহিনের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের জানান, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তিনি আরো বলেন, হঠাৎ করেই যশোরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বেড়ে গেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য আহ্বান জানান তিনি।