চুয়াডাঙ্গায় হতদরিদ্রদের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এহসান সোসাইটি লাপাত্তা

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার পাঁচ শতাধিক মানুষের প্রায় এক কোটি হাতিয়ে লাপাত্তা হয়েছে এহসান সোসাইটি নামের একটি এনজিও প্রতিষ্ঠান। তাদের সাইনবোর্ড খুলে নিয়ে রাতের আঁধারে সপরিবারে এলাকা ছেড়েছেন আব্দুল মালেক ও দাউদ হোসেন। কষ্টার্জিত টাকা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হতদরিদ্র লগ্নিকারী নারী-পুরুষ।

ভুক্তভোগী লগ্নিকারীদের অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে এহসান এস বাংলাদেশ নামের একটি এনজিও সংগঠন বিভিন্ন সুযোগের প্রলোভন দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ও তিতুদহ ইউনিয়ন এলাকার কয়েকশ সদস্য তৈরি করে। পরবর্তীতে সংগঠনটির নাম দেয়া হয় এহসান সোসাইটি। দোস্ত গ্রামের ঘরজামাই গফুর মুন্সির ছেলে আব্দুল মালেক ও একই গ্রামের জবেদ আলী মণ্ডলের ছেলে দাউদ হোসেন এলাকার দায়িত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন। এনজিও সংস্থাটি ইসলামের দোহাই দিয়ে সরলসোজা, নিরীহ ও হতদরিদ্র নারীদের টার্গেট করে ১শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত মাসিক সঞ্চয় আদায় শুরু করেন। দোস্ত, কুন্দিপুর, ডিহি, সুবোধপুর, ঝাঁঝরি, বেগমপুরসহ তিতুদহ ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের পাঁচ শতাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করেন তারা। গ্রাহকদের প্রতিটি বইয়ে বর্তমানে ৮ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় জমা পড়েছে। বছরখানেক আগে যেসব সদস্যের বইয়ের মেয়াদ শেষ হয়েছে তারা তাদের সঞ্চয়সহ লভ্যাংশের টাকা ফেরত চাইলে এনজিওটি টালবাহানা শুরু করে। এলাকার ভুক্তভোগী নারী-পুরুষ মালেক ও দাউদের নিকট ধরনা দিতে থাকে। টাকা না দিয়ে তারা আজ-কাল করে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক বুঝে প্রতারক আব্দুল মালেক রাতের আঁধারে সপরিবারে এলাকা ছেড়ে লাপাত্তা হয়ে গেছেন। লগ্নিকারী সদস্য দোস্ত গ্রামের মরজেম, সেকেন্দার, আকলিমা, জোছনা, জুলফাস, মনু মিয়া, সাইফুল, বিল্লাল, রশিদসহ শতাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, পাবনা জেলা থেকে প্রতারক মালেক এখানে এসে ধর্মের লেবাস লাগিয়ে আমাদের সাথে এতো বড় প্রতারণা করবে এটা কেউ কল্পনা করতে পারিনি। পাস বইয়ের ওপর যে সমস্ত ইসলামিক কথাবার্তা লেখা আছে তাতে কারোরই সন্দেহ থাকার কথা নয়। অভিযোগকারীরা বলেন, মালেক আমাদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সেই টাকা দিয়ে নামে-বেনামে বেশকিছু জমি কিনেছে। এমন কি ঢাকাতেও জমি কিনেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুল মালেক গতকাল মঙ্গলবার দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, আমরা ছিলাম আদায়কারী। রাঘব বোয়ালরা টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে। আর আমরা পড়ে গেছি বেকায়দায়। চুয়াডাঙ্গার আলুকদিয়া ইউনিয়নের পীরপুর গ্রামের জাহিদ হাসান ছিলেন ম্যানেজার। আমরা গ্রাহক পর্যায়ে সঞ্চয়ের টাকা আদায় করে তার কাছে জমা দিয়েছি।