ইবিতে ছাত্রলীগের অস্ত্রের মহড়া : দু রাউন্ড গুলিবর্ষণ

ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক কর্মীকে বহিরাগতরা মারধর করলে ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দেয়। মহড়ার সময় তারা পরপর দু রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত রাত সাড়ে ৭টার দিকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন শেখপাড়া বাজারে ভাই ভাই ছাত্রাবাসের নিকট মারধরের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি গ্রুপের কর্মী মেজবাহ উদ্দিন। তাকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশল অফিসের সহায়ক কর্মচারী (ইলেকট্রিশিয়ান) আলতাফ হোসেনের ছেলে রাতুল ও স্থানীয় বহিরাগতরা। মেজবাহ উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেজবাহকে মারার খবর শুনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা লাঠিসোঁটা, দা, হকিস্টিক নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয় এবং রাতুলকে খুঁজতে থাকে। ছাত্রলীগের কর্মীরা ক্যাম্পাসে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়ার সময় পরপর দু রাউন্ড গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়। মহড়া দেয়ার সময় হলগুলোতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত পৌনে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও ইবি থানার পুলিশ বঙ্গবন্ধু হল গেটে এসে পৌঁছায়। এ সময় তারা ছাত্রলীগ কর্মীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। জানা গেছে, রাত ৮টার দিকে ছাত্রলীগের কর্মীরা রাতুলের পিতা আলতাফ হোসেনকে ক্যাম্পাসের কোয়ার্টার থেকে ডেকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু হলের হলের অতিথি রুমে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে বিষয়টি আজকে সমাধান করে দেয়া হবে এমন শর্তে ছেড়ে দেয়া হয়। রাত পৌনে ৯টার দিকে ছাত্রলীগ কর্মীরা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা বাসগুলো ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার সময় বাধা দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর আলতাফ হোসেন ও পুলিশের হস্তক্ষেপে বাস চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

অস্ত্রের মহড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, বহিরাগতরা ছাত্রলীগের এক কর্মীকে মারধর করলে কর্মীদের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে তাদেরকে নিবৃত্ত করা হয়েছে। এছাড়া কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, ৪ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল ধরনের ছাত্র সমাবেশ, মিছিল-মিটিং ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা রযেছে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীরা ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় আবার অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। ছাত্রলীগের মহড়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. ত.ম লোকমান হাকিম বলেন, আমার জানামতে ক্যাম্পাসে অস্ত্রের মহড়া ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। তবে বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে মারধর করায় ছাত্রলীগ তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে আমি শুনেছি।

Leave a comment