পুলিশের হস্তক্ষেপে কবরস্থানে দাফন : তোলা হতে পারে লাশ
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা খাঁপাড়ার জহুরা খাতুন ওরফে জহুরা পাগলি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি……রাজেউন) গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে তিনি নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯০ বছর। তিনি দির্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে ১ ছেলে, ৪ মেয়ে, নাতি নাতকুড়িসহ অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী রেখেগেছেন। তিনি মহেশপুরের খাজা শরাফত শাহ’র মুরিদ ছিলেন। এদিকে তার মৃত্যুর পর লাশের দাফন নিয়ে উত্তরসূরীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। বিকেল থেকে নানা টালবাহানা শেষে রাত সাড়ে ১২টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ওসি কামরুজামানের হস্তক্ষেপে শেষমেষ দামুড়হুদা বাজারপাড়া কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। পুলিশের একাধিক দায়িত্বশীলসূত্র বলেছেন, লাশ দাফনের পর কবর নিয়ে বাণিজ্যের পায়তারাও করা হচ্ছে।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলা সদরের খা পাড়ার মৃত মাজেদ আলীর স্ত্রী জহুরা খাতুন প্রায় ৪০ ধরে মারফতি তরিকায় (ফকিরতন্ত্র) চলাফেরা করতেন। অনেকেই বলেছেন, তা বিড়ি সিগারেটসহ গাঁজা সেবনও করতে দেখা যেতো। তিনি জীবিত থাকা কালে প্রায় বছর পাঁচেক আগে নিজ বাড়িতে নিজের জন্য পাকা কবর তৈরি করেন এবং কবর বেষ্টিত ৫ শতক জায়গা খাজা বাবার নামে ওয়াকফো করেন। কবরের ওপরে টিনের ছাউনি দেয়া হয়। বছর তিনেক ধরে ওই কবরকে ঘিরে তার নাতি (ছোট মেয়ের ছেলে) পান্না খাজা বাবার নামে গান বাজনা শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার জহুরা পাগলীর মৃত্যুর পর তার বড় মেয়ে মনোয়ারা, মেজো মেয়ে জাহানারা, সেজো মেয়ে টুটুল নাহার ও একমাত্র ছেলে মহি তার মায়ের লাশ কবরস্থানে দাফনের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। কিন্ত বাধ সাধে ছোট মেয়ে তুন্না ও নাতি পান্না। ছোট মেয়ে তুন্নার দাবি মা জীবিত থাকাকালে নিজের কবর নিজে তৈরি করে রেখে গেছে। মাটি ওই কবরেই দেয়া হবে। কিন্তু তার অপর ৩ মেয়ে ও ছেলে মহির কথা শরিয়ত মোতাবেক মায়ের লাশের দাফন হবে গ্রামের কবরস্থানে। এছাড়া ওয়াকফো করে যাওয়া জমি নিয়েও রয়েছে বিরোধ। সুতরাং জেনে শুনে মাকে ওখানে কবর দিতে পারিনা। শুরু হয় দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা। বিষয়টি শেষমেষ থানা পুলিশ পর্যন্ত গড়ালে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ফরিদুর রহমান ও দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি কামরুজ্জামান ঘটনাস্থলে পৌছে স্থানীয় আলেম ওলামাদের কাছ থেকে শুনে লাশ গ্রামের কবরস্থানে দাফনের আদেশ দেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ব্র্যাকমোড়স্থ গ্রামের কবরস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে নানির তৈরি কবরস্থানে নানিকে কবর দিতে না পেরে মাটি দিতে যায়নি নাতি পান্না ও তার পরিবারের লোকজন। আপাতত কবরস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হলেও পান্না ও তার লোকজন কবর থেকে লাশ তুলে বাড়িতে তৈরি কবরে পুনরায় লাশ দাফন করতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারণা।