তাড়া খেয়ে ভোদৌড়ের পর ভোল পাল্টেছে সেই সাঈদ

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের দালাল খেদাতে সিভিল সার্জনের তৎপরতা : ভ্রাম্যমাণ আদালত

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর আধুনিক হাসপাতাল থেকে দালাল খেদাতে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সিভিল সার্জন ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার তৎপর হয়ে ওঠেন। বেলা ১১টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তথা উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচলিত হয়। তবে চিহ্নিত দালালদের তেমন কেউ ধরা না পড়লেও সকালে ঈদগাপাড়ার সেই সাঈদ ধাওয়ার মুখে দৌড়ে পালিয়ে বিকেলের মধ্যেই বেশভোষা পাল্টে নিয়েছে। বদলে ফেলেছে লেবাস।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর আধুনিক হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই চিহ্নিত কিছু বহিরাগত ব্যক্তি রোগী সাধারণের সাথে প্রতারণা করে আসছে। বিশেষ কমিশনের লোভে রোগী ভাগিয়ে ক্লিনিক নাসিং হোমেই শুধু দেয় না, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিকে নিয়েও রোগী সাধারণের সাথে প্রতারণা করা হয়। রক্ত দেয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে সটকে পড়ারও উদাহরণ রয়েছে এই হাসপাতালে। সর্বশেষ গতপরশু ৫শ টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের এক রোগীকে বেড থেকে নামিয়ে অন্য রোগীকে তুলে দেয় লেবাসধারী চিহ্নিত ব্যক্তি। এ বিষয়ে গতকাল পত্রিকায় বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। সকাল থেকেই সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম হাসপাতাল পরিদর্শন করে চিকিৎসকদের সাথে নিয়ে দালাল তাড়াতে ও নির্দিষ্ট সময়ের আগে রিপ্রেজেনটেটিভদের ভিজিটরোধে শক্ত অবস্থান নেন। সিভিল সার্জনের সামনেই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ রানা চিহ্নিত লেবাসধারী সাঈদকে দেখে ধমক দেন। সাঈদ উল্টো হুমকি দিলে আরএমও রুখে দাঁড়ান। তার সহকর্মীরা ছুটে গেলে সাঈদ দৌড়ে পালায়। পেছন থেকে কয়েকটি কিলঘুষিও হজম করতে হয় তাকে। এ ঘটনার পর হাসপাতালে দালালদের কেউ ঢুকতে সাহস পায়নি। সিভিল সার্জনের শক্ত পদক্ষেপে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরাও ভিজিট করতে হাসপাতালে চিকিৎসকদের ঘাড়ের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেননি। এরকম পরিবেশ পেয়ে হাসপাতালে যে ক’জন চিকিৎসক আন্তরিকতার সাথে চিকিৎসা সেবাদানের কাজে নিয়োজিত থাকেন তাদেরকে স্বস্তির সাথে ফুরফুরে মেজাজেই গতকাল হাসপাতালে রোগী দেখতে দেখা গেছে। ঠোটের নিচে মৃদ্যু হাসিও ছিলো তাদের।

এদিকে গতকালই বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তথা উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট কেএম মামুন উজ্জামানের নেতৃত্বে হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়। সদর থানার একদল পুলিশ ভ্রাম্যমাণ আদালতের সহযোগিতায় ছিলো। হাসপাতালের বহিরাগত দুজন ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়লেও চিকিৎসকদের তরফে জানানো হয়, ওরা স্বেচ্ছাসেবী। এ তথ্য পাওয়ার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত স্বেচ্ছাসেবীদের পরিচয়পত্র প্রদানের তাগিদ দিয়ে বলেন, পরবর্তীতে এ ধরনের কোনো কথা আদালত শুনবে না। অপরদিকে স্থানীয় একাধিক সূত্র বলেছে, ঈদগাপাড়ার সাইদ সকালে হাসপাতালের রোগীদের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে আরএমও’র ধাওয়ায় সটকে পড়ার পর লেবাস পাল্টে রাস্তায় ঘুরলেও হাসপাতালে ঢোকেনি। এই সাঈদই রোগীর বেড থেকে নামিয়ে অন্য রোগী উঠিয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া তাকে ডিবি হাসপাতাল থেকে ইতঃপূর্বে গ্রেফতার করে আদালতেও সোপর্দ করেছে এক দফা। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেছেন, প্রয়োজনে ওর বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে পুলিশে কড়া নালিশ করা হবে।