স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশি এক নারীর লাশ ৪০ দিন পর ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ। তাকে ধর্ষনের পর চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। গতকাল সোমবার সকাল ১১টার দিকে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম খান। লাশ হয়ে ফেরত আসা নারীর নাম নার্গিস আক্তার (৩৪)। তিনি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার ৩/১, কেডিএ এপ্রোস রোডের বাসিন্দা সাহাবুদ্দিনের মেয়ে।
বেনাপোল চেকপোস্টে লাশ নিতে আসা নিহতের মা মনিমালা জানান, আজমির শরিফ যাওয়ার জন্য তিনি নিজে, মেয়ে নার্গিস আক্তার ও নার্গিসের মেয়ে কোহিনুর কাকলীকে (৯) নিয়ে গত ৯ মার্চ পেট্রাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যান। ওই দিনই হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনের টিকেট কেটে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হই। রাত সাড়ে ৩টার দিকে ৪-৫ জন যুবক আমাদেরকে বলেন দিল্লি এসে গেছে, সবাই নামেন। এ সময় আমরা সবাই ট্রেন থেকে নেমে যাই। নার্গিসের একটি ব্যাগ ট্রেনে ভুলে রেখে আসায় ব্যাগটি আনতে গেলে ৩-৪ জন ওর মুখ চেপে ধরে ট্রেনের গার্ডের রুমে নিয়ে যায়।
মনিমালা আরো বলেন, আমি অন্ধ মানুষ চোখে দেখি না। কেবল মেয়ের গোংরানো চিৎকার শুনতে পেয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকি। ততোক্ষণে ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। পরে স্টেশন এলাকায় জিজ্ঞেস করে জানতে পারি এটা কানপুর স্টেশন। আমাদের তিনটি পাসপোর্টই নার্গিসের কাছে ছিলো। কয়েকদিন ধরে ওই স্টেশনে বসে কাঁদতে থাকি আর মানুষের কাছে আমার মেয়ের খোঁজ খবর নিই। অনেকে বলে তোমার মেয়ে বাংলাদেশে চলে গেছে। পরে কে বা কারা ১৬ মার্চ আমাদের দুজনকে পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধ পথে বাংলাদেশে পৌঁছে দিয়ে যায়।
লাশ নিতে আসা নার্গিসের চাচি রাহেলা বেগম জানান, ১৯ মার্চ হঠাৎ খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ আমাদের বাড়িতে খবর দেয় তোমাদের মেয়ে নার্গিস ভারতে মারা গেছে। লাশের সাথে ৩টি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে তাতে তোমাদের ঠিকানা রয়েছে। নিহতের মা মনিমালা জানান, থানা থেকে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ওই দিনই আমি থানায় একটি জিডি করি। মেয়ের ক্ষতিপূরণ ও লাশটি ফেরত এনে দেয়ার জন্য স্বরাস্ট্র, পররাস্ট্র ও আইন মন্ত্রনালয়সহ ৯টি দপ্তরে আবেদন করি। আমি এ হত্যার বিচার চাই।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ১৯ মার্চ খুলনা পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ বিষয়টি বাংলাদেশের ভারতীয় হাইকমিশনকে জানায়। ওই সময় নিহতের লাশ আগ্রার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালমর্গে ছিলো। পরে রাস্ট্রীয় পর্যায়ে দু দেশের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে লাশটি ফেরত এসেছে।