এটা কোনো নারীর ওপর হামলা নয় বাঙালি জাতির সংস্কৃতির ওপর আঘাত
স্টাফ রিপোর্টার: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ষবরণে সঙ্ঘবদ্ধচক্র কর্তৃক যৌন নিপীড়নের ঘটনায় চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ঘটনার পর ৫ দিন পার হলেও নগ্ন হামলাকারীদের ধরতে না পেরে পুলিশ যে বক্তব্য দিচ্ছে তাকে টালবাহানা বলে দাবি তুলে চুয়াডাঙ্গার প্রতিবাদকারীরা তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, ওই ঘটনা কোনো নারীর ওপর হামলার ঘটনা নয়, বাঙালি জাতির সংস্কৃতির ওপর আঘাত।
জানা গেছে, এলাকায় পয়লা বোশেখের অনুষ্ঠানে কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল যুবক দ্বারা সংঘটিত নারীর শ্লীলতাহানির অপচেষ্টা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার বিরুদ্ধে গতকাল বিকেল ৫টায় চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরে চুয়াডাঙ্গার সচেতন সংস্কৃতিকর্মীদের উদ্যোগে পালিত হয় প্রতিবাদ মানববন্ধন। বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিকর্মী মো. আলাউদ্দীন, অ্যাড. নওশের আলী, জহির রায়হান, আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সালাম সৈকত ও নারী সংগঠক আসমা হেনা চুমকি, নুঝাত পারভীন এবং বিশিষ্ট রাজনীতিক অ্যাড. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে উল্লেখ করেন, বাঙালির জাতীয় উৎসব পয়লা বোশেখে নারীর ওপর এরকম নগ্ন হামলা এবং পুলিশ প্রশাসনের টালবাহানামূলক বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তপক্ষের গুরুত্ব হীনতা দেখে মনে হয় এটা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা, অবশ্যই এটা পূর্ব পরিকল্পিত। এটা কোনো নারীর ওপর হামলা নয়, এটা বাঙালি সংস্কৃতির ওপর হামলা। বাঙালির বিভিন্ন সংস্কৃতি উৎসবে যাতে এভাবে মানুষের সমাগম না ঘটে তার জন্য মৌলবাদীমানসিতারই বিকৃত প্রকাশ। এখনই এদের রুখতে না পারলে ভবিষ্যতে জাতির কপালে কালো মেঘ নামতে সময় লাগবে না। বক্তাগণ দোষীদের শনাক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান রাখেন।
অপরদিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্ষবরণে সঙ্ঘবদ্ধচক্র কর্তৃক পরিকল্পিত যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে রোববার বিকালে শাহবাগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। সমাবেশে যৌন নিপীড়নের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনায় দায়ীদের গ্রেফতারে কালক্ষেপণের তীব্র সমালোচনা করেছেন বক্তারা। বিকেল ৫টা থেকে শুরু হওয়া সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, পয়লা বোশেখে উৎসবের প্রাণকেন্দ্র টিএসসিতে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা পূর্বপরিকল্পিত। ভিডিও ফুটেজ থেকে এটা পরিষ্কার বোঝা গিয়েছে যে, যারা এ হামলা করেছে তারা একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। হামলাকারীরা এক ঢিলে দু পাখি মারতে চেয়েছে। তারা একদিকে আমাদের নারীসমাজকে গৃহবন্দী করতে চেয়েছে অন্যদিকে বর্ষবরণের মতো বাংলা সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের কপালে কলঙ্ক তীলক এঁকে দিতে চেয়েছে।