ইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকা থেকে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার হিসেব মতে, মেধা তালিকায় ভর্তি শেষে মোট ১ হাজার ৪৬৫টি আসনের মধ্যে ৪৪০টি আসনই খালি আছে। কলা অনুষদভুক্ত বি ইউনিটের অধীন আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ৮০টি আসনের বিপরীতে একজন শিক্ষার্থী মেধা তালিকা থেকে ভর্তি হয়েছেন। ইউনিট সমন্বয়কারীরা জানিয়ছেন, শর্ত পূরণ না হওয়া, একই সাথে একাধিক ইউনিটে পরীক্ষায় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ হওয়া, দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাওয়ার কারণে এসব আসন শূন্য হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকা থেকে উত্তীর্ণদের ভর্তি কার্যক্রম গত ১৬ এপ্রিল শেষ হয়েছে। একাডেমিক শাখার হিসেব মতে, ধর্মতত্ত্ব অনুষদভুক্ত এ ইউনিটে ২০টি, কলা অনুষদভুক্ত বি ইউনিটে ১২০টি, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সি ইউনিটে ৫৪টি, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ডি ও ই ইউনিটে যথাক্রমে ৬১ ও ৪৮, গণিত ও পরিসংখ্যান বিভাগভুক্ত এফ ইউনিটে ৫৩টি, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত জি ইউনিটে ৩৪টি এবং আইন ও শরিয়াহ অনুষদভুক্ত এইচ ইউনিটে ৫০টি আসন খালি আছে। এ ইউনিটভুক্ত আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ২টি, আল হাদিস বিভাগে ১৮টি, দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ১টি, বি ইউনিটভুক্ত বাংলা বিভাগে ১৩টি, ইংরেজি বিভাগে ১০টি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে ১৮টি, সি ইউনিটভুক্ত অর্থনীতি বিভাগে ৯টি, রাষ্ট্রনীতি ও লোক প্রশাসন বিভাগে ৪৫টি, ডি ইউনিটভুক্ত বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২৮টি, ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগে ৩৩টি, ই ইউনিটে ফলিত পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ৪১টি, কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ৭টি, জি ইউনিটভুক্ত হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগে ৩টি, ব্যবস্থাপনা বিভাগে ৩০টি, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে ১টি, এইচ ইউনিটভুক্ত আইন বিভাগে ২৭টি ও আল ফিকহ বিভাগে ২৩টি আসন খালি আছে। কলা অনুষদভুক্ত আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে ৮০টি আসনের বিপরীতে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। বাকি ৭৯টি আসনই খালি আছে। বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ফলিত রসায়ন ও রাসায়নিক প্রযুক্তি এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে কোনো আসন খালি নেই।
আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ পেতে হলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ড থাকতে হয়। বি ইউনিটে মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছুদের মধ্যে একজন বাদে বাকিদের মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে একটি বাদে বাকি আসনগুলো খালি আছে। তবে আশা করছি, অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে আসন পূর্ণ হয়ে যাবে।
কলা অনুষদভুক্ত বি ইউনিট সমন্বয়কারী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, প্রায় এক তৃতীয়াংশ আসন খালি থাকার বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য অপেক্ষায় না থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেছেন। দ্বিতীয়ত, একাধিক ইউনিটে উত্তীর্ণ হওয়ার পর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী একটিতে ভর্তি হলে বাকিগুলোর আসন এমনিতেই খালি হয়ে যায়। তৃতীয়ত, শর্ত পূরণ না হওয়ার কারণে অনেক ভর্তিচ্ছু মেধা তালিকায় থাকার পরও ভর্তি হতে পারেনি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাকিম সরকার বলেন, কতোগুলো আসন খালি আছে আমার জানা নেই। ইউনিট সমন্বয়কারী ও ভর্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ বিষয়ে তালিকা না পাওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৩ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। শেষ হয় ২৭ নভেম্বর।