আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার প্রাগপুরে ওয়ার্ড যুবলীগের সম্পাদক বিদ্যুতকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকালই তাকে একটি মারামারি মামলায় আটক দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। সে ইতঃপূর্বে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলায় দীর্ঘ সময় কারাভোগ করেছে।
জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সকালে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের সহযোগিতায় আলমডাঙ্গা থানার এসআই মকবুল হোসেন প্রাগপুর ক্লাবপাড়া থেকে মৃত আব্দুল বারীর ছেলে বিদ্যুতকে (৪৫) গ্রেফতার করেন। সরকারি জমি দখলকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের দুজনকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করার মামলাসহ পূর্বের আরেকটি মারামারি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকালই বিদ্যুতকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার হারদী ইউনিয়নের ওসমানপুর মৌজার ড্যামচর মাঠের ১১ বিঘা সরকারি খাসজমি দখলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে এক পক্ষে প্রাগপুর গ্রামের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুজন আলী ও সাধারণ সম্পাদক একই গ্রামের বিদ্যুত এবং তার সহোদর ডলার পক্ষ বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। হিন্দু সম্প্রদায়ের হাত বদলের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে ওই সম্পত্তি চরমপন্থিদের দখলেই ছিলো। ৯৮ সালে সন্ত্রাসী গ্রুপ আত্মসমর্পণের পর প্রাগপুরের রায়হান উদ্দীন ওই সম্পত্তি ডিসিআর মূলে দখল করেন। পরে ওসমানপুর গ্রামের বুদো কৌশলে সে সম্প হস্তগত করে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, বুদো বিদেশে লোক পাঠানোর নামে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। সে টাকা আর ফেরত দিতে না পেরে পরে ওই আলোচিত সম্পত্তি পাওনাদারদের মাঝে ভাগ করে দেয়। অভিযোগ উঠেছে, প্রায় ৭-৮ মাস পূর্বে ওই সম্পত্তি ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রাগপুর গ্রামের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে বিদ্যুতের ভাই ডলার কিছু অংশ দখল করে। এ নিয়ে ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি একই গ্রামের সুজন আলীপক্ষ ও বিদ্যুত-ডলারপক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমরুপ ধারণ করে। প্রায় একসপ্তা ধরে দু-পক্ষের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। এরই মধ্যে গত ১৫ এপ্রিল ওসমানপুর মৌজার ড্যামচর নামক মাঠের বিরোধপূর্ণ ওই সরকারি জমিতে কাজ করতে যায় সুজনগ্রুপের প্রাগপুর গ্রামের আকালের ছেলে শামসুল ইসলাম (৪৫) ও একই গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে জগত আলী (৩৭)। এ সংবাদ শুনে বিদ্যুত ও ডলার সশস্ত্র অবস্থায় নিজ দলীয় কতিপয় লোকজন নিয়ে সেখানে ছুটে যায়। এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে- বিদ্যুত ও ডলার দু ভাই রামদা দিয়ে মাঠে কর্মরত শামসুল ও জগতকে উপর্যুপরি কুপিয়ে জখম করে। শামসুল ও জগতকে কুপিয়ে জখম করার সংবাদ পেয়ে সুজনগ্রুপ লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। সুজনপক্ষের ছুটে আসার বিষয়টি বুঝতে পেরে ডলার প্রকাশ্যে নাইন এমএম পিস্তল উঁচিয়ে প্রতিপক্ষের দিকে তাক করে পর পর দু রাউন্ড গুলি ছোড়েন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গুলির শব্দে প্রতিপক্ষরা পিছু হটে। পরে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে শামসুল ও জগত আলীকে প্রথমে হারদী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এ ঘটনায় জখম শামসুল ইসলামের ছেলে সাইদুর রহমান বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় বিদ্যুতের ভাই ডলার ও বিদ্যুতসহ আটজনকে আসামি করে এজাহার দায়ের করেছেন। ইতঃপূর্বে প্রাগপুরের আব্দুল হান্নানের দায়েরকৃত মারামারি মামলায় বিদ্যুতকে আটক দেখিয়ে গতকালই পুলিশ তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।