মেলায় বসে ৭ ডাকাতের মিলন : চাকু ঘুরিয়ে পরাস্তের পর এক ডাকাত পাকড়াও

চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদী ডাকাতির সময় হাতেনাতে ধরাপড়া মুজিবননগর মহাজনপুরের বাবলু হাসপাতালে

 

স্টাফ রিপোর্টার: গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার আগেই হানুরবাড়াদীতে হাতেনাতে ধরাপড়া বাবলুকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতপরশু ভোরে হানুরবাড়াদীর জনগণের মাঝ থেকে বাবলুকে গ্রেফতার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাতে হাতকড়া পরিয়েই তার চিকিৎসা চলছে। ডাকাতদলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গৃহকর্তার ছেলে জাহিদ হাসানকেও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

গতপরশু রাত আড়াইটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের হানুরবাড়াদী গ্রামের আবু তালেব মালিতা ও তার ছেলে জাহিদ হাসানের বাড়িতে ডাকাতির সময় ধরাপড়া বাবলু নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছে, সে মেহেরপুর মুজিবননগরের মহাজনপুর ঘরামিপাড়ার ছুন্নত আলীর ছেলে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাবলু বলেছে, তারা ৭ জন চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠের মেলায় পরশু সন্ধ্যার পর একত্রিত হয়। কালীগঞ্জের মজনু আর যশোরের শাহীন ছাড়া অন্যদের নাম ঠিকানা জানে না বলে জানিয়েছে। তবে পুলিশ বলেছে, বাবলু অনেক কিছুই গোপন করছে। তাকে ঠিকমতো জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার সহযোগীদের সকলেই নামধাম প্রকাশ করবে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছে, আবু তালেব মালিতা ও তার ছেলে জাহিদ ভূষিমাল ব্যবসায়ী। গতপরশু ভুট্টা বিক্রির ৬ লাথ ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ির একটি ঘরের হাড়ার মধ্যে রেখে যে যার মতো ঘুমিয়ে পড়ে। রাত আড়াইটার দিকে ৭ জনের একদল ডাকাত প্রথমেই আবু তালেবের ঘরে ঢোকে। ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। ছেলে জাহিদ হাসানের ঘরে ঢুকে তাকে জিম্মি করতে গেলে সে ধারালো অস্ত্র চাকু নিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে ঢাকাতদলকে প্রতিরোধের চেষ্টা চালাতে থাকে। নিজের ওপর চাকু ধরা ডাকাতদলের তিন সদস্যকে জাহিদ পরাস্ত করতে সক্ষম হয়ে পিতাকে মুক্ত করতে এগিয়ে যায়। তখনই ৪-৫ জন ডাকাত সম্মিলিতভাবে জাহিদকে মেরে কাবু করে। এরই মাঝে চিৎকারে প্রতেবশী হায়দার আলীর ছেলে জহুরুল ছুটে আসে। জাহিদ ও জহুরুলসহ কেয়েকজন ডাকাতদলের একজনকে আটকে ফেলে। অন্যরা তখন পরপর তিনটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমা তিনটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে গ্রামের সাধারণ মানুষ জেগে উঠে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ডাকাতদলের ৬ জন পালিয়ে গেলেও বাবলু আর পালাতে পারেনি। তাকে ধরে শুরু হয় গণপিটুনি। এরই এক পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ খবর পেয়ে হানুরবাড়াদী গ্রামের উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে বাবলুকে গ্রেফতার করে। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপরদিকে জাহিদকেও ভর্তি করতে হয়েছে হাসপাতালে। জহুরুল ইসলামের হাতের দুটি আঙুল ও পায়ে বোমার স্প্লিন্টারে আহত হয়েছে। তবে তা গুরুতর নয়।

ডাকাতির শিকার পরিবারের সদস্য বলেছেন, ডাকাতদল ঘরের হাড়ার মধ্যে রাখা ৬ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে গেছে।