বিকট শব্দে আগুন : সড়কে ছিঁড়ে পড়লো ১১ হাজার কেভি বিদ্যুতের তার

চুয়াডাঙ্গা শহীদ হাসান চত্বরে প্রাণহানির শঙ্কায় দিশেহারা মানুষের হুড়োহুড়ি : ভাগ্যিস প্রাণ রক্ষা

 

খাইরুজ্জামান সেতু: তখন দুপুর ১২টা বেজে দশ। চুয়াডাঙ্গার প্রাণকেন্দ্র শহীদ হাসান চত্বরসহ ৪টি রাস্তায় মাঝারি ধরনের ভিড়। আচমকা বিকট শব্দে চমকে উঠলেন সকলে। থানার সামনে বিদ্যুতের তারের আগুন মুহূর্তের মধ্যেই ছুটে আসে শহীদ হাসান চত্বরের শিমরান হোটেলের সামনে। তখন বিকট শব্দে দুলছে বিদ্যুতের তার। থানার সামনের ও শহীদ আবুল কাশেম সড়কের বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের ১১ হাজার কেভি বিদ্যুতের তার তার ছিঁড়ে পড়তেই প্রাণহানির শঙ্কায় দিশেহারা মানুষের হুড়োহুড়িতে আতঙ্কের মাত্রা বেড়ে যায় বহুগুণ। দোকানিদের অধিকাংশই দোকান বন্ধ করে দেন।

দোকানিদের কেউ কেউ দ্রুত খবর দেন বিদ্যুত বিতরণ অফিসে। কেউ কেউ খবর দেন ফায়ার স্টেশনে। থানার ভেতর থেকে একদল পুলিশ বেরিয়ে গ্যাস দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা লাল গাড়ি নিয়ে হাজির হন শহীদ হাসান চত্বরে। বিদ্যুত সরবরাহও বন্ধ করে দেয়া হয় জাফরপুরস্থ গ্রিড সাবস্টেশন থেকে। ভয়াবহ পরিস্থিতি ফুটে উঠলেও প্রাণহানি ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কেন এমন হলো? কী কারণে বিদ্যুতের লাইনে বিকট শব্দে ধরলো আগুন। কেন ঝড় বাতাস ছাড়াই দুলতে লাগলো উচ্চ ক্ষমতার বৈদ্যুতিক তার? আতঙ্ক লাল হয়ে ওঠা পথচারীদের এসব প্রশ্নের জবাব তাৎক্ষণিক না মিললেও থানার সামনে যেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর ধরে আগুন, সেই স্থানের নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায় একটি মরা কাঠবিড়ালি। একটি কাঠবিড়ালই কি এতো বড় ঘটনা ঘটিয়ে প্রাণ দিলো? স্পষ্ট জবাব মেলেনি। তবে বৈদ্যুতিক তারে আগুন লাগার পর বাজারের বেশ কিছু ব্যবসায়ীর বৈদ্যুতিক মিটার বিকল হয়েছে। ঘটনার পর থেকে টানা ৩ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট বড় বাজার ফিডারে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিলো। মেরামতের পর বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে বিদ্যুত সরবরাহ শুরু করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার এসআই মামুন অর রশিদ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, হঠাৎ বিকট শব্দ। কেন শব্দ হলো? উৎস খুঁজতে থানার ভেতর থেকে বের হতেই দেখি আগুন জ্বলছে। অগ্নিনির্বাপক গ্যাস নিয়ে আগুনে ছুড়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে শুরু করি। আগুন দ্রুত শহীদ হাসান চত্বরের দিকে ছুটে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনায় আমরা কিংকর্তব্যবিমুড় হয়ে যাওয়ার মতো হয়ে পড়ি। ফায়ার স্টেশনের সদস্যরাও দ্রুত ঘটনাস্থলে হাজির হন। বিদ্যুতও বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে প্রাণহানি ঘটেনি। কেন এমনটি হলো? এ প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে ওজোপাডিকোর চুয়াডাঙ্গাস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হাসান বলেছেন, সম্ভবত বড়বাজার মাথাভাঙ্গা ব্রিজের ওইদিকে ভারি কোনো যানবহন পোলে ধাক্কা দিয়েছে। সেই ধাক্কায় তার দুলে দুর্বল স্থানে ছিঁড়ে গেছে। সে কারণেই আগুনও ধরেছে।