অসহায় মায়ের অভাগা সন্তান লড়ছে মৃত্যুর সাথে

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ভালাইপুর মোড়ে অবৈধযানের চাকায় পিষ্ট

 

কামরুজ্জামান বেল্টু: অসহায় মায়ের ৪ বছর বয়সী শিশুকন্যাকে চাকায় পিষে গুরুতর জখম করেছে শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধযান আলমসাধু। নববর্ষের দিন সকাল ১১টার দিকে ভালাইপুর পানহাটে দরিদ্র মা সফুরা খাতুন যখন আহার জোগাতে একের পর এক ব্যক্তির কাছে পাতছিলেন হাত, তখন শিশুকন্যা ফাতেমা রাস্তার ওপর গিয়ে দুর্ঘটনায় লুটিয়ে পড়ে পিচঢালা পথে। কালো পিচের রাস্তা শিশুর রক্তে লাল হয়ে ওঠে।

শিশু ফাতেমাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে যখন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক তখন শিশু ফাতেমার মায়ের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। আহারই জোটে না। ভিক্ষে করে দিন কাটে। মেয়ের চিকিৎসার টাকাই নেই। রাজশাহী নেবে কীভাবে? অবস্থা দেখে সহযোগিতার হাত বাড়ান দারিদ্র পুনর্বাসন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ওষুধ ব্যবসায়ী মানিকুজ্জামানসহ অনেকে। মানিকুজ্জামান নিজেই ৩ হাজার ১ টাকা দিয়ে মোট সাড়ে ৪ হাজার টাকা তুলে অ্যাম্বুলেন্সযোগে শিশুকন্যাকে রাজশাহী নেয়ার ব্যবস্থা করেন দেন। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছিলো ফাতেমা।

জানা গেছে, দামুড়হুদা ধান্যঘরার মেয়ে সফুরা খাতুনের সাথে আলমডাঙ্গার সাহেবপুরের আনারুলের বিয়ে হয়। এদের সংসারে আসে ফাতেমা। সন্তান আসার পরপরই আনারুল নিজের মতো হয়ে যান। সফুরা তার সন্তান নিয়ে পিতার বাড়ি ধান্যঘরায় থাকেন। ভিক্ষে করেই দিন কাটে। গতকাল সফুরা তার মেয়েকে সাথে নিয়ে ভালাইপুর মোড়ের পানহাটে ভিক্ষে করার সময় শিশু ফাতেমা যায় চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের ওপর। এ সময় তাকে ধাক্কা দেয় আলমসাধু। চাকায় পিষ্ট করে। রক্তাক্ত জখম মেয়েকে নিয়ে অসহায় সফুরা এখন অনিশ্চয়তার অথৈই সাগরে।