মাওনা ফ্লাইওভার উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

রাজনীতির অধিকার নেই খালেদা জিয়ার

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়ার এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা কোন ধরনের রাজনীতি। এ অধিকার কে দিয়েছে? আন্দোলনের নামে ৯২ দিনে ১৫০ জন নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এতো বড় গুনাহ আর কি হতে পারে। গতকাল শনিবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর নবনির্মিত মাওনা ফ্লাইওভার উদ্বোধন শেষে মাওনা পিয়ার আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট রহমত আলীর সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর সিটির ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, শ্রীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল, যুবলীগ নেতা ওসমান গণি, কৃষকলীগ নেতা কবির হোসেন প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বলেন, এ ফ্লাইওভারটি শ্রীপুর-কালিয়াকৈর সংযোগকারী আঞ্চলিক মহাসড়কের সংযোগস্থল মাওনার তীব্র যানজট নিরসনের পাশাপাশি বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থানের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি সাধন করবে। সামগ্রিকভাবে ঢাকা-ময়মনসিংহ অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর, দ্রুত ও নিরাপদ হবে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কিছু শিক্ষক খালেদা জিয়াকে উদ্ধার করতে নেমেছেন। তাদের বুদ্ধি বিবেক, মনুষ্যত্ববোধ নেই। যাদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ আছে তারা খালেদা জিয়ার সাথে থাকতে পারেন না। বিএনপি জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। বাংলার মাটিতে জঙ্গিবাদীদের স্থান হবে না। খালেদা জিয়া তিন মাস ধরে আন্দোলন করে ব্যর্থ হয়েছেন। ব্যর্থতার গ্লানি নিয়ে তিনি আদালতে হাজির হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ২০০৯ সালে দ্বিতীয় বারের মতো রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে আমরা সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। সহসাই বাস্তবায়নের জন্য বেশকিছু প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে। মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিলো বিশ্বব্যাংকের সহায়তা না পেলে পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন করা যাবে না। কিন্তু আমরা তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত করতে সক্ষম হয়েছি। ইনশাল্লাহ ২০১৮ সালের মধ্যে পদ্মা সেতু চালু হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি  জামায়াত জোট আমলে শেষ বছরে মাথাপিছু আয় ছিলো ৬৪৩ মার্কিন ডলার। যা আজ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৯০ মার্কিন ডলারে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্য আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার কমিয়ে ২৪ শতাংশে নামিয়ে এনেছি। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫ হাজার ২৭৫টি ডিজিটাল সেন্টার চালু করা হয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ও নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হতে পারবো।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর ফ্লাইওভারটির নির্মাণ কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ের তিন মাস আগেই এর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। ৯০০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৯ মিটার প্রস্থের চার লেন বিশিষ্ট এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৭০ কোটি ২২ লাখ টাকা। এ ফ্লাইওভার প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর এসডব্লিউও-পশ্চিম এর অধিনস্ত ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন কর্তৃক বাস্তবায়ন করা হয়। প্রকল্পের মহাপরিচালক সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ যুবায়ের সালেহীন, প্রকল্প পরিচালক কর্নেল ইফতেখার আনিস, উপপরিচালক লে. কর্নেল এসএম আনোয়ার হোসেন, প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর তানিম শাহরিয়ার দায়িত্ব পালন করেন।